জাবি সংবাদদাতা ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে তার পদত্যাগ দাবি এবং ভর্তি পরীক্ষার হলে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ‘অগ্রহণযোগ্য এবং অযৌক্তিক’ মনে করছে বিশ্ব¦বিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিস থেকে এক জরুরী বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভর্তি পরীক্ষার হল পরিদর্শনে উপাচার্য মহোদয়কে কেউ বাধা দিতে পারেন না।’
গত ১৮ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি এবং ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন জাবি উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ১ অক্টোবর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘উপাচার্যের বিরুদ্ধে কোন তদন্ত তিনি নিজে করতে পারেন না। এ বিষয়ে মহামান্য আচার্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টাসহ বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের একাধিক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেছেন, গণমাধ্যম বা সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত সম্ভব নয়। তদন্ত করতে হলে অভিযোগ লিখিতভাবে করতে হবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রশাসনিক প্রধান এবং সেই হিসেবে তিনি প্রশাসনিক সব সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ সিনেট এবং সিন্ডিকেটের সভাপতি তিনি। কাজেই অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়ের বিরুদ্ধে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে এই বিষয়টি তদন্ত করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে ‘ন্যায়বিচারের সাধারণ নীতি’ ব্যাহত হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩-এর ধারা ১২ এর (৩) ও (৪) নং উপধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন কর্মকর্তা কিংবা যে কোন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারেন বা সিদ্ধান্তের কার্যকরিতা স্থগিত রেখে তার মতামতসহ কর্তৃপক্ষকে ফেরত পাঠাতে পারেন। ‘ন্যায়বিচারের সাধারণ নীতির স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোন তদন্ত কমিটি হতে পারে না। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কেবলমাত্র রাষ্ট্রীয় আদেশে বিচারবিভাগের এক বা একাধিক কর্মকর্তার সমন্বয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় আদেশ ছাড়া অপর কেউ বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের আদেশ দিয়ে তদন্ত আয়োজন করতে পারে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার উপাচার্য পদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন-১৯৭৩ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই আইনের ১২ ধারায় সুনির্দিষ্টভাবে উপাচার্যের ক্ষমতা বলে দেয়া হয়েছে কিন্তু তার বিরুদ্ধে আনীত কোন অভিযোগের বিষয়ে তার করণীয় সম্পর্কে বলা হয়নি।
এদিকে, উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ এর পক্ষ থেকে পৃথক এক বিবৃতিতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আমির হোসেনের পদত্যাগ দাবি করা হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: