-
জোনাকফুল
লতিফ জোয়ার্দার
আজ আর কোথাও যাব না আমি। এই মধ্য ভাদ্র মাসের অন্ধরাত্রির নিকট থেকে। অবিরত জোনাকফুলের গল্পের আয়োজনটুকুর আবেদন ফুরাবে না আর কখনও কোনদিন। কেউ জানবে না। কতরাতে কত নক্ষত্র ঝরে পড়ে। কেউ বুঝবে না। কতরাতে বুকের মানচিত্রে ঘুমিয়ে পড়ে ক্লান্তির মিছিল। আজ আর কোথাও যাব না আমি। কোন হোটেল কোন রেস্তরাঁ। আগের মতো কোন নাচঘর নেই আর কোথাও। এখন পাড়ার যুবক যুবতীরা ফেসবুকে ঘুমিয়ে আছে। পতিতা পল্লীর দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আর কবিতা লিখবে না কখনও কেউ। মায়াবী জলফড়িংয়ের মতো আর কেউ ডাকবে না। আবার কখনও কোন রাতজাগা পাখি হয়ে।
** ঘাসফুল ভোর
বাবুল আনোয়ার
মধ্যরাতের ট্রেন ম্লান জোছনা মাড়িয়ে
পৌঁছে গেলে পরিচিত স্টেশন
বিহ্বল সুরে বাজে বিদায়ের সানাই
উষ্ণতাহীন শেষরাতের হিমেল প্রহরে
প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকে না কেউ
বিষাদের ঘননীল কুয়াশায়
গুটিয়ে যায় পৌষের নদী
আবছায়া অন্ধকারে দুচোখের আলোয়
দীর্ঘযাত্রা শেষে দীঘল বিশ্বাসে
কাউকে পাই না খুঁজে
প্রতীক্ষারত মায়ের করুণ চোখের মতো
তার সাথে জেগে থাকে ঘাসফুল ভোর।
** ফেরি কাহিনী
আসিফ নূর
পুরাতন ফেরিঘাটটির নাম আরিচা-নগরবাড়ী,
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটটির বয়সও সমান।
এক ফেরি আসে-যায় বাউল পদ্মার ওপর,
অন্য ফেরি যমুনার খর স্রোতে ভাসায় গতর।
পদ্মার জল মেঘলা-ঘোলা-অনেকেই জানি,
যমুনার ঢেউ পরিষ্কার খুব; পুরস্কার দেবে কী?
দুই ফেরিঘাটের মধ্যিখানেই মিশেছে দুই ঈর্ষাবতী নদী।
ফেরি পারাপারের যাত্রীরাও ভিন্ন ভিন্ন রঙের-
কেউ ফরসা, কেউ বা কালো; কারও শ্যামলা মুখ।
জীবিকার অনিবার্য পথে সবাই মিলেছে এখানে;
শ্যাওলাপ্রতিম জীবনের জলকোলাহলে।