
ছবি: সংগৃহীত
অনেক শিশুই স্কুলে, আত্মীয়-স্বজনদের সামনে কিংবা মঞ্চে কথা বলতে ভয় পায় বা দ্বিধায় ভোগে। এমন পরিস্থিতি আজ অনেক অভিভাবকেরই উদ্বেগের কারণ।
আধুনিক সময়ে যোগাযোগ দক্ষতা স্কুল, ইন্টারভিউ এমনকি অনলাইন ক্লাসেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আত্মবিশ্বাসী ও স্পষ্টভাবে কথা বলা সন্তান গড়ে তুলতে অনেকেই এখন যোগাযোগ দক্ষতা শেখানোতে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
কিন্তু কীভাবে সন্তানকে আত্মবিশ্বাসীভাবে কথা বলতে শেখাবেন?
কেন কিছু শিশু আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলতে পারে না?
অনেক শিশুই ৬ থেকে ১৫ বছর বয়সে কথা বলতে সংকোচ বোধ করে। সাধারণত কিছু কারণ থাকে:
-
ভুল বলার বা অন্যের বিচার হওয়ার ভয়
-
পূর্বের খারাপ অভিজ্ঞতা (উদাহরণ: হাসাহাসি হওয়া)
-
স্বভাবগত অন্তর্মুখী বা উদ্বিগ্ন মনোভাব
-
চিন্তা পরিষ্কারভাবে সাজিয়ে বলতে না পারা
-
শব্দভাণ্ডার ও প্রকাশের দক্ষতার অভাব
তবে যেমন সাইকেল চালানো শেখা যায়, তেমনই ধৈর্য, সহানুভূতি আর চর্চার মাধ্যমে শিশুর কথা বলার দক্ষতাও বাড়ানো যায়।
পাবলিক স্পিকিং কীভাবে শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়?
শিশুকে রাজনীতিবিদ বা পারফর্মার বানাতে হবে না, কিন্তু প্রত্যেক শিশুরই পরিষ্কারভাবে কথা বলা শেখা দরকার।
এর সুফল:
-
আত্মসম্মান তৈরি: নিজের কথা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়।
-
স্পষ্টতা ও শারীরিক ভাষা উন্নতি: বাক্য গঠন, ভঙ্গিমা ও শ্রোতা আকর্ষণ শেখে।
-
চিন্তা গুছিয়ে বলার অভ্যাস: বিতর্ক বা তাৎক্ষণিক বক্তব্যে দ্রুত চিন্তা সাজাতে শেখে।
-
ভুলের ভয় কমে: নিয়মিত অভ্যাসে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
-
নেতৃত্বগুণ তৈরি: শাই শিশুও নেতৃত্ব দিতে শেখে।
বাস্তবিক সহজ উপায়ে শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়ান
শুরুতেই বড় ক্লাসে না গিয়ে ঘরে সহজ কিছু অভ্যাসে চর্চা শুরু করুন:
-
পরিবারের মাঝে শুরু করুন: খাবারের টেবিলে দিনের গল্প বলাতে উৎসাহ দিন।
-
তাড়াহুড়া বা বেশি সংশোধন করবেন না: ভুল করলেও বলার সুযোগ দিন।
-
বাস্তব সুযোগ দিন: জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা, দাদু-দাদির সামনে পড়া বা ফোনে কথা বলা—সবই অভ্যাস।
-
আয়না বা ভিডিও চর্চা: নিজেকে দেখে বলা শেখান—মজা করেও শিখবে।
-
ছোট ছোট অর্জন উদযাপন করুন: ক্লাসে উত্তর দেওয়া হোক বা মঞ্চে বলা—সাহসের প্রশংসা করুন।
শিশুদের যোগাযোগ কোর্স কেন কাজ করে?
অনলাইনে সরাসরি ক্লাসে শিশুদের আত্মবিশ্বাস সহজেই বাড়ে। কারণ:
-
ধাপে ধাপে শেখানো: গল্প বলা, খেলা থেকে শুরু করে বিতর্ক পর্যন্ত ধাপে শেখানো হয়।
-
সহপাঠীদের দেখেও শেখা: সমবয়সীদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়।
-
বয়সভিত্তিক গ্রুপ: শিশুদের মানসিক স্তর অনুযায়ী কোর্স থাকে।
-
অগ্রগতি ট্র্যাক: নিয়মিত রিপোর্ট ও ভিডিওর মাধ্যমে উন্নতি দেখা যায়।
ভালো কোর্স বাছাইয়ের সময় দেখুন:
-
লাইভ ও ইন্টারঅ্যাকটিভ ক্লাস কি না
-
প্রশিক্ষকরা কি শিশুদের সাথে দক্ষভাবে কাজ করেন
-
পাঠ্যসূচিতে কি গল্প বলা, বিতর্ক, বক্তৃতা রয়েছে
-
শিক্ষার্থীরা কি কথা বলার সুযোগ পায়
-
অভিভাবকদের কি অগ্রগতির তথ্য দেয়া হয়
শুধু কয়েক সপ্তাহের ক্লাস নয়—এটা ভবিষ্যতের জন্য বড় বিনিয়োগ। স্কুল, চাকরি, মঞ্চ কিংবা জীবনের প্রতিটি স্তরে এই দক্ষতা কাজে লাগবে।
সন্তানের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য জটিল কিছু করার দরকার নেই। দরকার শুধু সঠিক পরিবেশ, ধৈর্য ও সুযোগ। আজ থেকেই শুরু করুন। আপনার সন্তানও হয়ে উঠুক আত্মবিশ্বাসী এক বক্তা!
আবির