
ছবি: সংগৃহীত
আমরা অনেকেই দিন শুরু করি অ্যালার্ম ঘড়ির শব্দ, এক কাপ কফি আর দ্রুত ইমেইল চেক করে। কিন্তু যারা সত্যিকারের সফল, তারা দিন শুরু করেন একদম অন্যভাবে। আরিয়ানা হাফিংটন বলেন, “আমার সকালের অভ্যাসগুলোর বড় অংশ হলো আমি কী করি না—আমি ঘুম থেকে উঠে ফোন দেখি না। বরং, আমি চোখ খুলেই কিছুক্ষণ গভীরভাবে শ্বাস নিই, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি আর দিনটির জন্য নিজের লক্ষ্য ঠিক করি।”
নিচে উল্লেখ করা হলো সফল ব্যক্তিদের এমন পাঁচটি সকালের অভ্যাস, যা আপনাকেও দিন শুরুতে এনে দিতে পারে ফোকাস, স্বচ্ছতা আর উৎপাদনশীলতা—
১. অ্যালার্ম ঘড়ি বাদ দিন
আমাজনের প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোস প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমান এবং কখনো অ্যালার্ম ব্যবহার করেন না। ওপ্রাহ উইনফ্রেও একই অভ্যাস মেনে চলেন। তিনি বলেন, “আমি কখনো অ্যালার্ম দেই না। আমি অ্যালার্মে বিশ্বাসই করি না। আমি মনে মনে ঘুম থেকে ওঠার সময়টা ঠিক করে নিই, আর তার আগেই আমার ঘুম ভেঙে যায়।”
আরিয়ানা হাফিংটনও বলেন, “অ্যালার্ম শব্দটাই আতঙ্কের! এটা শুনেই শরীরে চাপ ও উদ্বেগের হরমোন ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে দিন শুরু করলে সারা দিনই চাপের মধ্যে থাকতে হয়।”
২. সকালে প্রথমেই পানি পান করুন, কফি নয়
অনেকেই সকালে উঠে কফি খাওয়াকে স্বাভাবিক মনে করেন। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রথমেই পানি খাওয়াই ভালো। দীর্ঘ সময় পানি না খেয়ে থাকার পর শরীরকে হাইড্রেট করতে পানি অত্যন্ত জরুরি। অভিনেত্রী ক্যামেরন ডিয়াজ বলেন, “আমি ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই দাঁত ব্রাশ করি, এরপর এক লিটার পানি খাই। এতে শরীর চনমনে থাকে।”
সকালে এক গ্লাস পানি আপনাকে দিন শুরুর জন্য সতেজ আর ইতিবাচক করে তুলতে পারে।
৩. শরীরচর্চা করুন
সকালে শরীরচর্চা অনেক সফল ব্যক্তির অভ্যাস। অভিনেত্রী গুইনেথ প্যালট্রো সকালে নিয়মিত ব্যায়াম করেন। বিল গেটস সকালবেলায় ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতে ভিডিও দেখেন। ইকুইনক্স প্রতিষ্ঠানের সিইও নিকি লিওনডাকিস বলেন, “শারীরিকভাবে সুস্থ ও শক্তিশালী না হলে মানসিকভাবেও সুস্থ থাকা সম্ভব নয়। সবকিছুই একে অপরের সঙ্গে জড়িত।”
৪. সকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া কমান
রাতেই পরের দিনের প্রস্তুতি সেরে রাখুন। এতে সকালে কাজ শুরু করা সহজ হয়। আমেরিকান এক্সপ্রেসের সাবেক সিইও কেনেথ চেনাল্ট প্রতিরাতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ লিখে রাখেন।
‘শার্ক ট্যাঙ্ক’ খ্যাত বারবারা করকোরানও রাতে অফিস ছাড়ার আগে কাজের তালিকা তৈরি করেন এবং পরদিন কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী A, B, C হিসেবে তা শ্রেণিবদ্ধ করেন। তিনি বলেন, “A ক্যাটাগরির কাজই আসল কাজ, যা আমার ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
রাতে পরিকল্পনা করলে সকালটা হয় চাপমুক্ত ও কার্যকর।
৫. নিজেকে একটি প্রশ্ন করুন
নিজেকে প্রশ্ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়াত স্টিভ জবস প্রতিদিন সকালে আয়নায় তাকিয়ে নিজেকে জিজ্ঞেস করতেন, “আজ যদি আমার জীবনের শেষ দিন হয়, তবে আজকের জন্য ঠিক করা কাজগুলো কি আমি করতে চাই?”
যদি বারবার ‘না’ আসে, তিনি বুঝতেন, পরিবর্তন দরকার।
এই অভ্যাস আত্ম-উপলব্ধির দারুণ এক কৌশল, যা আপনাকে জীবন আর কাজের সঠিক পথে রাখবে।
এই পাঁচটি সহজ কিন্তু কার্যকর অভ্যাস সফল মানুষদের দিনে ফোকাস, শক্তি আর লক্ষ্য এনে দেয়। একবারে সব শুরু করার দরকার নেই—একটি অভ্যাস দিয়ে শুরু করুন, দেখবেন আপনার সকালও বদলে যাচ্ছে।
আবির