ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

৯৪ বছরে অবসরেও থামছেন না বাফেট! তাঁর অবসর পরিকল্পনার এই একটি কৌশল বদলে দিতে পারে আপনার জীবন!

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ৩০ জুন ২০২৫; আপডেট: ২৩:২৯, ৩০ জুন ২০২৫

৯৪ বছরে অবসরেও থামছেন না বাফেট! তাঁর অবসর পরিকল্পনার এই একটি কৌশল বদলে দিতে পারে আপনার জীবন!

বিশ্বের সবচেয়ে সফল বিনিয়োগকারীদের একজন ওমাহার ওরাকল খ্যাত ওয়ারেন বাফেট। প্রায় ছয় দশক ধরে নেতৃত্ব দিয়ে আসার পর বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের সিইও পদ থেকে এবার সরে দাঁড়াতে যাচ্ছেন তিনি। বয়স এখন ৯৪। কিন্তু অবসর মানেই ঘরে বসে একঘেয়ে জীবন এই ধারণা তার ক্ষেত্রে মোটেই খাটে না। বরং কীভাবে একজন মানুষ বয়স বাড়লেও জীবনের প্রতি আগ্রহ ও সক্রিয়তা ধরে রাখতে পারেন, তার জীবন্ত উদাহরণ তিনি।

বাফেটের অবসরের পরিকল্পনায় কী আছে?

ওয়ারেন বাফেট নিজেই স্বীকার করেছেন, বয়সের ছাপ এখন শরীরে এসে গেছে। তবুও তিনি অফিসে যাওয়া ছাড়বেন না। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্টভাবেই বলেছেন, “আমি ঘরে বসে নাটক দেখবো না। আমার আগ্রহগুলো এখনো আগের মতোই রয়ে গেছে।”তিনি আরও বলেন, “বাজারে যদি হঠাৎ করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, তখন আমি কাজে লাগতে পারি। কারণ, দাম কমে গেলেও আমি ভয় পাই না, যেটা অনেকেই পারেন না।”

এছাড়াও, তিনি ব্যস্ত থাকবেন তার দাতব্য কাজ নিয়ে। ‘দ্য গিভিং প্লেজ’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বাফেট অঙ্গীকার করেছেন, জীবিত অবস্থায় কিংবা মৃত্যুর সময় তার মোট সম্পদের ৯৯ শতাংশ তিনি দান করে যাবেন।

বাফেটের মতো জীবনযাপন থেকে আপনি কী শিখতে পারেন?

গবেষণা বলছে, অবসরের সময়টা পিছিয়ে দিলে বা অবসরের পরেও সক্রিয় থাকলে শরীর ও মনের ওপর ভালো প্রভাব পড়ে। ২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সুস্থ ব্যক্তিরা অবসর এক বছর দেরিতে নিলে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১১ শতাংশ কমে যায়। আর যাদের আগে থেকেই কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল, তাদের ক্ষেত্রেও অবসরের সময়টা পেছালে জীবন কিছুটা হলেও দীর্ঘ হয়।

শুধু দীর্ঘ জীবন নয়, সক্রিয়তা ধরে রাখলে মনও তরতাজা থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বয়স বাড়লেও মানসিকভাবে ব্যস্ত থাকেন, যেমন যুক্তি প্রয়োগ, পরিকল্পনা বা নতুন কিছু শেখার অভ্যাস রাখেন, তারা অনেক ধীরগতিতে স্মৃতিশক্তি হারান।

আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, বয়স বাড়লেও যারা সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করেন, শুধু ঘরে বসে থাকেন না, বাইরে বের হন, মানুষের সঙ্গে মিশে থাকেন—তাদের মন ভালো থাকে, শরীরও বেশি সচল থাকে।

ওয়ারেন বাফেটের অফিসে যাওয়া, বিনিয়োগ সিদ্ধান্তে যুক্ত থাকা এবং দাতব্য কাজগুলো মূলত তাকে সক্রিয় রাখছে। সেটাই হয়তো তার বয়সে এসেও জীবনীশক্তির রহস্য।

ওয়ারেন বাফেট শুধু বিনিয়োগের জাদুকর নন, জীবনের প্রতিও তার দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের শেখায়—বয়স বাড়লেও থেমে যাওয়ার কিছু নেই। অবসর মানেই জীবন থেমে যাওয়া নয়। বরং এটাই হতে পারে নতুনভাবে নিজেকে গড়ে তোলার সময়। তিনি যেমন আজও কাজে যাচ্ছেন, সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, অন্যের উপকারে নিজের সম্পদ বিলিয়ে দিচ্ছেন, আমরাও চাইলে নিজেদের অবসর জীবনকে করে তুলতে পারি অর্থবহ, প্রাণবন্ত আর আনন্দময়।

তাই যদি ভাবেন, অবসর মানেই অলস বসে থাকা, তাহলে আরেকবার ভেবে দেখুন। কারণ ওয়ারেন বাফেটের গল্পটা বলছে, জীবনের গতি কখনো থামে না যদি আপনি থেমে না যান।

 


সূত্র:https://tinyurl.com/28ed7ta8

আফরোজা

×