
ছবি: সংগৃহীত
চেহারার ত্বক আগের মতো টানটান নেই? গলার চারপাশে ঢিলে ভাব, চোয়ালের রেখা যেন একটু ‘ঝুল’ গেছে? বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের স্বাভাবিক টান কিছুটা কমে যাওয়া স্বাভাবিক হলেও কিছু অভ্যাস এই প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত করে তোলে। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, স্ট্রেস, এবং অনিয়মিত ঘুম—সবই এর জন্য দায়ী। তবে সুসংবাদ হচ্ছে, প্রতিদিনকার জীবনধারায় মাত্র কয়েকটি অভ্যাস যোগ করলেই আপনি এই সমস্যা ঠেকাতে পারেন।
নিচে রইল এমন ৫টি প্রমাণিত অভ্যাস, যা চেহারার ত্বককে টানটান, প্রাণবন্ত ও বয়সের ছাপমুক্ত রাখতে সহায়তা করবে।
১. সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
সূর্যের ক্ষতি ত্বকের দ্রুত ঝুলে পড়ার প্রধান কারণ। UV রশ্মি কোলাজেন ও ইলাস্টিন প্রোটিনকে নষ্ট করে দেয়—যারা ত্বককে টানটান রাখতে কাজ করে। প্রতিদিন অন্তত SPF ৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন—সেটি মেঘলা দিন হোক বা আপনি ঘরে থাকুন না কেন। গলা, কানের পেছন, ও চোয়ালের কাছেও লাগাতে ভুলবেন না। বাইরে থাকলে প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর আবার লাগান। ভাবুন, এটি আপনার তারুণ্যের জন্য একটি অদৃশ্য ঢাল।
২. চিনি কমান—ত্বককে বয়সের ছাপ থেকে বাঁচান
চিনি শুধু শরীরের ওজনই বাড়ায় না, ত্বকেরও বড় ক্ষতি করে। অতিরিক্ত চিনি রক্তে গিয়ে কোলাজেন ও ইলাস্টিনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের দুর্বল করে ফেলে, যার ফলে ত্বক ঝুলে পড়ে। চকলেট, কেক নয়—বেছে নিন ব্লুবেরি, বাদাম কিংবা ডার্ক চকোলেট (স্বল্প পরিমাণে)। প্রচুর পানি পান করুন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফলমূল ও সবজি খান—ত্বক ভিতর থেকে উজ্জ্বল ও টানটান থাকবে।
৩. ঘুমের ধরন বদলান—বালিশেও লুকিয়ে আছে ত্বকের যত্ন
চোখ বা গালের ভাঁজ কি ঘুমের পর আরও স্পষ্ট লাগে? সম্ভবত আপনি পাশ ফিরে বা উবু হয়ে ঘুমান। এতে ত্বকের ওপর চাপ পড়ে এবং সময়ের সঙ্গে ত্বক ঝুলে পড়ে। পিঠের ওপর ঘুমানোর চেষ্টা করুন এবং সিল্ক বা স্যাটিনের বালিশের কভার ব্যবহার করুন—ঘর্ষণ কমে, ত্বকও হাইড্রেট থাকে। নিয়মিত ৭–৮ ঘণ্টার গাঢ় ঘুম ত্বকের পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪. স্কিন কেয়ার রুটিনে আনুন কোলাজেন-বিল্ডিং উপাদান
ত্বক টানটান রাখতে কোলাজেন গুরুত্বপূর্ণ। স্কিন কেয়ারে যোগ করুন রেটিনল (ভিটামিন A), পেপটাইড, সেরামাইড ও হায়ালুরোনিক অ্যাসিড-এর মতো উপাদান। রেটিনল কোষ পুনর্জীবিত করে, পেপটাইড কোলাজেন তৈরি করতে সহায়তা করে, সেরামাইড ত্বকের বাধা শক্তিশালী করে এবং হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে। রাতে এসব অ্যাক্টিভ লাগান, সকালে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। চাইলে সপ্তাহে ১–২ দিন ফার্মিং মাস্ক ব্যবহার করুন তাৎক্ষণিক লিফটিং ইফেক্টের জন্য।
৫. প্রতিরোধই উত্তম চিকিৎসা—এখনই শুরু করুন
ত্বক ঝুলে পড়ার আগেই এই অভ্যাসগুলো শুরু করলে অনেকদূর পর্যন্ত তা ঠেকানো সম্ভব। আর যদি ইতিমধ্যেই সমস্যা শুরু হয়ে যায়, তাহলেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। ছোট ছোট নিয়মিত পরিবর্তন সময়ের সঙ্গে চোখে পড়ার মতো ফল দেয়। শুধু বাইরের যত্ন নয়, ভেতর থেকেও যত্ন নিন—পুষ্টিকর খাবার খান, ব্যায়াম করুন, পর্যাপ্ত ঘুম নিন এবং পরিবেশের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করুন।
চেহারার ত্বক আপনার সবচেয়ে দৃশ্যমান পরিচয়—একটু ভালোবাসা দিন, সময় দিন, দেখবেন ত্বক আপনাকে ফিরিয়ে দেবে তারুণ্যের দীপ্তি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
রাকিব