
ছবি: সংগৃহীত
গরমকাল মানেই রসালো লিচুর মৌসুম। বাজারে লালচে-গোলাপি রঙের টসটসে এই ফল দেখলেই জিভে জল আসে। শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিতেও অনন্য এই গ্রীষ্মকালীন ফলটি। বিশেষ করে এই সময় শরীর ঠান্ডা রাখা, হজম ভালো রাখা থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে লিচুর জুড়ি নেই। চলুন জেনে নিই, গরমে লিচু খাওয়ার ৬টি চমকপ্রদ উপকারিতা—
১. হৃদপিণ্ডের সুরক্ষা দেয়
লিচুতে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। এতে থাকা অলিগোনল ও ফ্ল্যাভোনয়েড জাতীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, হৃদপিণ্ডের ওপর অক্সিডেটিভ চাপ কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
২. হজমের সমস্যায় কার্যকর
লিচুর ফাইবার ও জলসমৃদ্ধ গঠন হজমপ্রক্রিয়া সক্রিয় করে তোলে। এটি অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং গ্যাস ও অম্বলের সমস্যা কমায়। গরমে হালকা ও সহজপাচ্য ফল হিসেবে এটি হতে পারে দারুণ পছন্দ।
৩. মানসিক স্বাস্থ্যে সহায়ক
লিচুতে থাকা বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন—যেমন বি৬, নিয়াসিন, রিবোফ্লাভিন ও ফোলেট—স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখে, মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক এবং মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান মস্তিষ্কের কোষ রক্ষা করে স্মৃতিশক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৪. ত্বক ও চুলের যত্নে
গ্রীষ্মে ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক ও ক্লান্ত। লিচুতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে রোদে পোড়া থেকে রক্ষা করে, আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে, চুলের গড়ন উন্নত করে এবং কোলাজেন তৈরিতে সহায়ক।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় লিচু শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর। এটি ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে, প্রদাহ কমায় এবং শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
৬. শরীর ঠান্ডা ও হাইড্রেটেড রাখে
লিচুর আরেকটি বড় গুণ হলো এর জলের পরিমাণ। এই ফলে প্রায় ৮০ শতাংশ পানি থাকে, যা গরমকালে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে এবং পানিশূন্যতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
তাই গরমে সুস্বাদু কিছু খেতে চাইলে লিচু হতে পারে স্বাস্থ্যকর ও উপকারী একটি বিকল্প। তবে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন—বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস রোগী লিচু খেতে পারবেন ঠিকই কিন্তু পরিমিতভাবে খেতে হবে।
রাকিব