ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

লিভার ও কিডনি ভালো রাখবেন কীভাবে?

প্রকাশিত: ২০:১৬, ১৭ মে ২০২৫

লিভার ও কিডনি ভালো রাখবেন কীভাবে?

ছবি: সংগৃহীত

কিডনি এবং লিভার-মানবদেহের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যেগুলোর কার্যক্ষমতা ব্যাহত হলে তা প্রাণঘাতী পর্যায়েও পৌঁছাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগ দেখা দেওয়ার আগে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করাই সবচেয়ে কার্যকর। আর এ ক্ষেত্রেই কার্যকর একটি প্রাচীন প্রবাদ, “প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর”।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনির রোগ প্রতিরোধ শুরু হওয়া উচিত প্রসূতি মা এবং গর্ভস্থ শিশু থেকেই। ভারতের মতো দেশে কম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুর হার বেশি, যার ফলে অলিগো মেগা নেফ্রোনিয়া নামে একটি জন্মগত কিডনি সমস্যা দেখা দেয়। এতে নেফ্রনের সংখ্যা কম হলেও, আকার বড় হয়। পরিণত বয়সে এই শিশুদের উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি জটিলতা হতে পারে।

এই ধরনের সমস্যা এড়াতে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের পুষ্টির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। গর্ভাবস্থার প্রথম দুই মাস সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে শিশুর জন্মের সময় ওজন স্বাভাবিক হয়, ফলে ভবিষ্যতের কিডনি সমস্যা এড়ানো সম্ভব।

এছাড়াও, নবজাতকদের মধ্যে প্রস্রাবে সমস্যা বা প্রস্রাব উলটো দিকে কিডনিতে চলে যাওয়া-এ ধরনের জন্মগত অসুবিধা প্রায়ই দেখা যায়। তাই শিশুর জন্মের পরই হাসপাতাল-ভিত্তিক রুটিন স্ক্রিনিং ও টেস্ট করা উচিত। এতে দ্রুত সমস্যার চিহ্নিতকরণ ও চিকিৎসা সম্ভব হয়।

ব্যথা কমাতে অনেকেই ইচ্ছেমতো পেইন কিলার সেবন করেন, যা সাময়িক আরাম দিলেও কিডনির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, দীর্ঘমেয়াদে এই ধরনের ওষুধ কিডনি বিকলের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পেইন কিলার বা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

কিডনি ও লিভার ভালো রাখতে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা জরুরি।

কী কী রাখা উচিত খাদ্যতালিকায়: ফল, শাকসবজি, ও পুরো শস্য, পর্যাপ্ত পানি।

কী এড়িয়ে চলবেন: সোডিয়াম ও অতিরিক্ত লবণ, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত প্রোটিন, মিষ্টি পানীয় ও চিনিযুক্ত খাবার, ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান।

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস কিডনির অন্যতম প্রধান শত্রু। এদের নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। সবচেয়ে জরুরি বিষয় হচ্ছে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং-যাতে অঙ্গের জটিলতা আগে থেকেই ধরা পড়ে এবং সময়মতো প্রতিকার নেওয়া যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে: সতর্কতা, নিয়মিত পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনেই লুকিয়ে আছে কিডনি ও লিভার সুস্থ রাখার চাবিকাঠি।

মিরাজ খান

×