
ছবি: সংগৃহীত
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যদি একমুঠো চিনাবাদাম রাখা যায়, তবে তা শরীরের জন্য হতে পারে এক অভাবনীয় স্বাস্থ্যসাথী। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনাবাদাম শুধুমাত্র একটি সস্তা ও সহজলভ্য খাবার নয়, এটি একটি প্রাকৃতিক সুপারফুড - যা নিয়মিত খেলে শরীরের নানা দিক থেকে উপকার পাওয়া যায়।
চিনাবাদাম প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ফাইবার, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ। ১০-১৫টি চিনাবাদাম খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি ও পুষ্টি অনেকটাই পূরণ হয়।
চিনাবাদামে থাকা মনো-অ্যানস্যাচুরেটেড ও পলি-অ্যানস্যাচুরেটেড ফ্যাট হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত পরিমিত চিনাবাদাম খেলে খারাপ কোলেস্টেরল কমে যায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বেড়ে যায়, যা হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
চিনাবাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে। ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়।
চিনাবাদাম উচ্চ ফাইবার এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে, যার ফলে অতিরিক্ত খাওয়া কমে যায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। যদিও এটি ক্যালোরি সমৃদ্ধ, তবে সঠিক পরিমাণে খেলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে না।
চিনাবাদামে থাকা ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং অকালবার্ধক্য প্রতিরোধ করে। এছাড়াও, এতে থাকা বায়োটিন ও প্রোটিন চুলের গোড়া মজবুত করে ও চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
চিনাবাদামে থাকা নিয়াসিন এবং রেসভারাট্রল নামক উপাদান মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে এবং আলঝেইমারসহ বিভিন্ন নিউরো ডিজেনারেটিভ রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।
বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন একমুঠো (প্রায় ২৮–৩০ গ্রাম) চিনাবাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেন। কাঁচা বা হালকা ভাজা অবস্থায় খাওয়া উত্তম। লবণযুক্ত বা অতিরিক্ত ভাজা চিনাবাদাম এড়িয়ে চলাই ভালো, কারণ এতে অতিরিক্ত সোডিয়াম ও ট্রান্স ফ্যাট থাকতে পারে।
চিনাবাদামে অ্যালার্জি আছে এমন ব্যক্তিদের এটি একেবারেই পরিহার করতে হবে। এছাড়া, অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধি বা হজমে সমস্যা হতে পারে।
চিনাবাদাম একটি সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত উপকারী খাবার। প্রতিদিন একমুঠো চিনাবাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে তা হতে পারে সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত জীবনের একটি শক্তিশালী ধাপ।
মিরাজ খান