
আজকের ব্যস্ত আর গতিময় জীবনে মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ ও সজাগ রাখা অত্যন্ত জরুরি। ঘুম, ব্যায়াম ও মানসিক অনুশীলনের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসও আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। কিছু নির্দিষ্ট খাবার রয়েছে যা নিয়মিত খেলে আপনার মনোযোগ ও মানসিক স্বচ্ছতা বাড়তে পারে। নিচে তুলে ধরা হলো এমন ছয়টি উপকারী খাবার, যা মস্তিষ্ককে সতর্ক রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
ডিম
ডিম হলো কোলিনের একটি চমৎকার উৎস, যা অ্যাসিটাইলকোলিন নামক এক নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সহায়তা করে। এই নিউরোট্রান্সমিটার মেজাজ এবং স্মৃতিনিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ডিমে উচ্চমাত্রার প্রোটিনও থাকে, যা সারা দিনে শক্তি ও মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়ক।
কুমড়ার বিচি
কুমড়ার বিচিতে রয়েছে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, জিংক এবং কপার, যা মস্তিষ্কের সুস্থতায় অপরিহার্য। ম্যাগনেশিয়াম নার্ভ সংকেত পরিচালনায় সহায়তা করে, জিংক স্মৃতি ও শেখার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এবং আয়রন মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ করে। এক মুঠো কুমড়ার বিচি দ্রুত মানসিক উদ্দীপনা জাগাতে পারে।
ব্রকোলি
ব্রকোলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন কে-সমৃদ্ধ একটি সবজি, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এতে থাকা চোলিন স্মৃতিশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকলাপ বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ চাপ থেকে রক্ষা করে, যা মানসিক স্বচ্ছতা রক্ষায় সহায়ক।
ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেটে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যাফেইন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে সজাগতা ও মনোযোগ উন্নত করে। এতে থাকা ক্যাফেইন প্রাকৃতিকভাবে শক্তি জোগায় এবং ফ্ল্যাভোনয়েড স্মৃতি ও বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে। উপকার পাওয়ার জন্য অন্তত ৭০ শতাংশ কোকোযুক্ত ডার্ক চকোলেট গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
ফ্যাটি মাছ
স্যালমন, ট্রাউট এবং সার্ডিন জাতীয় ফ্যাটি মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর, যা মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজনীয়। ওমেগা-৩ মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সহায়তা করে এবং স্নায়বিক নমনীয়তা বাড়ায়, যা শেখার ক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তির উন্নতিতে সহায়ক। এ ছাড়া এটি মনোভাব নিয়ন্ত্রণে এবং মানসিক ক্লান্তি হ্রাসে ভূমিকা রাখে।
ব্লুবেরি
ব্লুবেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে ফ্ল্যাভোনয়েডসমৃদ্ধ, যা মস্তিষ্কের কোষগুলোর মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করে। এটি অক্সিডেটিভ চাপ ও প্রদাহ কমিয়ে দেয়, যার ফলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে, প্রতিক্রিয়া দ্রুত হয় এবং মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়। নিয়মিত ব্লুবেরি গ্রহণ বয়সজনিত মানসিক অবক্ষয় ধীর করতে পারে।
এই ছয়টি খাবার শুধুমাত্র মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ করে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর সহায়ক হতে পারে। খাদ্যাভ্যাসে সচেতনতা এবং মানসিক যত্ন গ্রহণের মাধ্যমেই নিশ্চিত করা সম্ভব একটি কার্যকর ও সুস্থ মস্তিষ্ক।
সূত্র:https://tinyurl.com/y442za4d
আফরোজা