ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ায় ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া কী? যা জানালেন আইনজীবী

প্রকাশিত: ১৫:৩০, ১২ জুন ২০২৫

পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ায় ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া কী? যা জানালেন আইনজীবী

ছবি: প্রতীকী

পরিচিতজন বা আত্মীয়-স্বজনকে টাকা ধার দেওয়া আমাদের সমাজে সাধারণ ঘটনা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই টাকা লেনদেন হয় কোনও লিখিত চুক্তি বা আইনি প্রমাণ ছাড়াই, যার পরিণতি হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক ক্ষতি ও আইনি জটিলতা। এমনই সতর্কবার্তা দিলেন ব্যারিস্টার লিমা আঞ্জুমান এক ভিডিও আলোচনায়।

সম্প্রতি এক অনলাইন ভিডিও আলোচনায় ব্যারিস্টার লিমা বলেন, ‘অনেকে বিশ্বাসের জায়গা থেকে টাকা ধার দেন, কিন্তু যখন সেই টাকা আর ফেরত আসে না, তখন তাঁরা আইনত দুর্বল হয়ে পড়েন। এমনকি আপন ভাই, বন্ধু বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়কেও যদি লিখিত প্রমাণ ছাড়া টাকা দেন, সেটা ভবিষ্যতে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘ধরে নিন, আপনি দীর্ঘদিন ধরে কারো কাছে টাকা পাচ্ছেন, কিন্তু সে কোনওভাবেই ফেরত দিচ্ছে না—তাহলে কী করবেন? প্রথমেই দেখা হবে, আপনার কাছে সেই পাওনা প্রমাণ করার মতো কাগজপত্র আছে কি না। যদি না থাকে, তাহলে আইনগতভাবে টাকা আদায় অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।’

কীভাবে নিরাপদে টাকা ধার দেবেন?

ব্যারিস্টার লিমা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন—

১. সাক্ষীর উপস্থিতিতে টাকা দিন: লেনদেনের সময় অন্তত একজন নির্ভরযোগ্য সাক্ষী রাখুন, যিনি পরবর্তীতে প্রয়োজনে সাক্ষ্য দিতে পারেন।

২. লিখিত চুক্তি করুন: নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একটি চুক্তিপত্র তৈরি করুন, যাতে টাকার পরিমাণ, ফেরতের সময়সীমা ও শর্তাবলি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।

৩. আইনজীবীর পরামর্শ নিন: বড় অঙ্কের টাকা লেনদেনের আগে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করে উপযুক্ত চুক্তিপত্র তৈরি করে নিন।

‘ভালো মনে টাকা দেওয়া’ যেন দুর্ভোগে না ফেলে

বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতায় অনেকেই ‘বিশ্বাস’ কিংবা ‘সমাজে মান-ইজ্জত’ রক্ষায় লিখিত প্রমাণ ছাড়াই অর্থ সহায়তা দেন। কিন্তু পরবর্তীতে সেই ব্যক্তি টাকা ফেরত না দিলে আইনি লড়াই শুরু করেও ফল না পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ব্যারিস্টার লিমা বলেন, ‘টাকা ফেরত না পাওয়া, প্রতারণা, কিংবা সম্পর্ক নষ্ট হওয়া—সবকিছুই এড়ানো সম্ভব যদি আগে থেকেই কিছু সতর্কতা অবলম্বন করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্মরণীয় বিষয় হচ্ছে, আপনার টাকা রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে। আগে থেকে সতর্ক থাকলে, পরে মামলা-মোকদ্দমা এড়ানো যায়।’

এই আলোচনার মূল বার্তা একটাই—আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে আবেগ নয়, দরকার বাস্তবতা ও আইনি সচেতনতা। তবেই আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কও থাকবে অটুট, আর নিজের অর্থও থাকবে নিরাপদ।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/shorts/eWnfdxdnyXI

রাকিব

×