ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১

প্রথম বিসিএসেই বাজিমাত: ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া তামজিদের বিস্ময়কর সাফল্য

জাফরান ইশরাত

প্রকাশিত: ১৪:১৬, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৪:৪৪, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রথম বিসিএসেই বাজিমাত: ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া তামজিদের বিস্ময়কর সাফল্য

তামজিদ ইয়ামিন

তামজিদ ইয়ামিন এর জীবনের গল্প অনেক ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া তরুণেদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াশোনা করেন তামজিদ, এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (আইবিএ)-তে। ব্যাচেলর্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে একাডেমিক উৎকর্ষতার পরিচয় দিয়ে তিনি নিজের দক্ষতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান। তবে এখানেই থেমে যাননি তিনি; নিজের জীবনের লক্ষ্য পুনঃনির্ধারণ করে, এক বিশাল সিদ্ধান্ত নেন — বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষা দেওয়ার। আজ তিনি সহকারী কর কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ৩৮ তম বিসিএসে বিসিএস কর মেধাক্রমে হয়েছিলেন প্রথম এই তরুণ।

পরিবার থেকে প্রেরণা

তামজিদের বাবা ও মা দুজনেই ছিলেন বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা। বাবা প্রশাসন ক্যাডারে এবং মা শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি দেখেছেন, কীভাবে তার বাবা-মা দেশের জন্য কাজ করেছেন এবং একটি সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করেছেন। তাদের প্রেরণা ও উৎসাহ তামজিদকে উদ্বুদ্ধ করেছে দেশের জন্য কাজ করতে।

আইবিএ থেকে বিসিএস: লক্ষ্য পরিবর্তনের গল্প

আইবিএ থেকে পাস করার পর তামজিদ একটি নামী আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন। তবে সেখানে কাজ করার সময় তিনি বুঝতে পারেন, তার সত্যিকারের আগ্রহ দেশের মানুষের জন্য কিছু করার। করপোরেট জগতে কাজ করার পাশাপাশি তিনি বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন।

তামজিদের মতে, “আমি জানতাম, বিসিএস পরীক্ষার জন্য আমার সময় এবং পরিকল্পনা উভয়ের প্রয়োজন। পরিবারের সমর্থন আর নিজের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই আমি এই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছি।”

কঠোর পরিশ্রম এবং সাফল্য

তামজিদের যাত্রা সহজ ছিল না। ইংলিশ মিডিয়াম কারিকুলামের ছাত্র হওয়ায় বিসিএস পরীক্ষার বাংলা এবং বাংলাদেশের ইতিহাস-সংস্কৃতির অংশগুলো তার জন্য ছিল একটি চ্যালেঞ্জ। তবে তিনি নিয়মিত অধ্যবসায় ও পরিকল্পিত প্রস্তুতির মাধ্যমে সেই চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করেছেন।

তিনি বলেন, “আমি প্রতিদিনের সময়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ বাংলা এবং সাধারণ জ্ঞানের জন্য বরাদ্দ করতাম। বিসিএস-এর সিলেবাস পুরোপুরি শেষ করার পর মক টেস্টে অংশ নেওয়াটা আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।”

আজকের তামজিদ ইয়ামিন

আজ তামজিদ সহকারী কর কমিশনার হিসেবে দেশের কর ব্যবস্থাকে উন্নত করার কাজে নিজেকে সম্পূর্ণ নিয়োজিত করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তার দায়িত্ব কেবল সরকারি রাজস্ব বাড়ানো নয়, বরং সাধারণ মানুষের মধ্যে কর সচেতনতাও তৈরি করা।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও বার্তা

তামজিদ ইয়ামিন মনে করেন, “যুবসমাজের উচিত বড় স্বপ্ন দেখা এবং দেশের উন্নয়নে নিজেদের ভূমিকা রাখা। যদি কেউ মন থেকে চায় এবং কঠোর পরিশ্রম করে, তাহলে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, “বিসিএস কেবল একটি চাকরি নয়, এটি দেশের মানুষের জন্য কাজ করার এক বিশাল সুযোগ।”

জাফরান

×