ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

চাকরির পরীক্ষার পরিকল্পনা  ও কিছু ভুল কাজ

প্রকাশিত: ০০:২৮, ১০ মার্চ ২০২৩

চাকরির পরীক্ষার পরিকল্পনা  ও কিছু ভুল কাজ

.

সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে আমরা প্রায়ই অনেক ভুূল করে থাকি। চাকরির বিষয়ে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত/চিন্তা ভবিষ্যতে আমাদের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই জেনে নেই আমাদের ভুল সিদ্ধান্তগুলো-
১।  স্নাতক এ ভর্তির পর ৯০% শিক্ষার্থীদের চিন্তা চাকরির পড়া পড়তে হবে। এই চিন্তা করতে করতেই  স্নাতক শেষ হয়ে যায়, কিন্তু চাকরির পড়া আর হয় না।
২। আমাদের একটা বড় রোগ আছে- কোন বই পড়ব, কোন শিট পড়লে ভাল হবে ইত্যাদি নিয়ে মগ্ন থাকা। ফেসবুকে কেউ হ্যান্ডনোট দিতে চাইলে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ি। সব শেষে দেখা যায় নিজের কাছে যে বই আছে, সেটা মাসে একবারও খোলা হয়নি। তাই নিজের বইটি আগে শেষ করুন, তারপর অন্য বইয়ের চিন্তা।
৩। পরীক্ষার ৩/৪ দিন আগে অনেকে শর্ট সাজেশন খুঁজেন। চাকরির পরীক্ষায় কোথা থেকে কি প্রশ্ন আসবে তা বলার বা জানার সুযোগ নেই। তবে কোন বিষয়গুলো অধিক গুরুত্বপূর্ণ তা হয়তো অনুমান করা যেতে পারে। তাই এই রকম ব্যক্তিদের জন্য মনে হয় সময় নষ্ট করা ছাড়া আর কিছু নয়।
৪। প্ল্যানিং একটা বড় সমস্যা। অনেকেই ব্যাংক, বিসিএস, শিক্ষকতা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জন্য একসঙ্গে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে একটা পরীক্ষারও প্রস্তুতি ভালোভাবে নিতে পারে না। তাই প্রথমে টার্গেট নিতে হবে আপনি কি করবেন।
বিসিএস : এই পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি পরীক্ষার জন্য কেমন সময় দিতে পারবেন। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে আপনাকে ৪-৫টি ধাপ পার করতে হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় এক্ষেত্রে চাকরি হওয়া পর্যন্ত  সবকিছু সম্পূর্ণ হতে কম করে হলেও ২ বছর লেগে যাবে। তাই আগে ভাবুন, এতটা সময় আপনার আছে কিনা।
ব্যাংক : ব্যাংকে বড় আকারে নিয়োগ হয়। নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ইংরেজিতে হয় বলে আপনাকে ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। ইংরেজিতে দক্ষ হলে এবং নিয়মিত পড়াশোনা করলে আপনার জন্য একটা ভালো সুযোগ হতে পারে।  
শিক্ষকতায় নিয়োগ : এটা সবাই ভাবে অনেক সহজ। কিন্তু এটাই সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। তবে মজার বিষয় ৬০% চাকরির পরীক্ষার্থী তেমন পড়াশোনা করে না। আর ৮০% পরীক্ষার্থীর চিন্তা দুর্নীতি। আর যারা দুর্নীতির চিন্তা করে, তারা তেমন পড়াশোনায় মন দিতে পারে না। গত বছরের পরীক্ষা থেকে আমরা এটা দেখতে পেয়েছি দুর্নীতি করে চাকরি পাওয়া এখন অনেক কঠিন। তাই যারা পড়াশোনা করে তাদের জন্য অনেক ভালো একটা সুযোগ আছে। এখানে আপনি অনেক সহজে ভালো ফলাফল করতে পারবেন। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ছেলেদের পেতে হবে ৬৫-৭০ মার্ক এবং মেয়েদের ৬০-৬৫ মার্ক। তাহলে চাকরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শিক্ষক নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও আগের থেকে অনেক ধাপ এগিয়েছে। তাই আপনারা এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেন।
মন্ত্রণালয়ের চাকরি : সবচেয়ে বেশি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হয়ে থাকে মন্ত্রণালয়ের চাকরির জন্য। তবে ৮০% নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির যোগ্যতা এসএসসি এবং এইচএসসি। তাই অনার্স পর্যন্ত অপেক্ষা করার কোনো দরকার নেই। আপনি অনার্স প্রথম বছর থেকেই এই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি এবং আবেদন করতে পারেন। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে একটা বিষয় সবচেয়ে বেশি দেখা যায়- একটা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে সেই নিয়োগের পরীক্ষা হতে হতে কম করে হলেও ১ বছর চলে যাবে। অনেক পরীক্ষা দ্রুত হলেও বেশিরভাগ এমনই হয়ে থাকে। যাদের ইচ্ছে এই চাকরিগুলো করবেন, তাদের উচিত অনার্স পড়ার পাশাপাশি নিয়োগ পরীক্ষা দেওয়া বা ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া।
যাদের সরকারি চাকরি বা বিসিএস ই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার মূল লক্ষ্য, তারা এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে চলুন। তাহলে সময় আপনাকে জয়ী করবেই।
চাকরি বাজার ডেস্ক

×