ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে মনোনীত করলো পাকিস্তান

প্রকাশিত: ১৯:১৪, ২১ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৯:১৮, ২১ জুন ২০২৫

নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে মনোনীত করলো পাকিস্তান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত  মনোনীত করেছে পাকিস্তান সরকার। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিরসনে ট্রাম্পের কূটনৈতিক ভূমিকার জন্যই তাকে এ মনোনয়ন দেওয়া হবে।

পাকিস্তানের বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ট্রাম্পকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় ইসরায়েলের পাশে না দাঁড়ানোর জন্য প্ররোচিত করাও একটি উদ্দেশ্য হতে পারে। রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে পাকিস্তান।

মে মাসে, ট্রাম্প আকস্মিকভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর পর পারমাণবিক শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চার দিন ধরে চলা সংঘর্ষ থেমে যায়। ট্রাম্প দাবি করেন, এতে তিনি লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ রক্ষা করেছেন। যদিও তিনি অভিযোগ করেন, তার এই ভূমিকার জন্য তিনি কোনো স্বীকৃতি পাননি।

পাকিস্তান মনে করে, মার্কিন কূটনৈতিক হস্তক্ষেপেই যুদ্ধ থেমেছে। তবে ভারত বলছে, এটি ছিল দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যকার একটি দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ বজায় রেখে দ্রুত অবনতিশীল পরিস্থিতি প্রশমিত করেছেন। তিনি শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রে অসাধারণ কৌশল ও রাষ্ট্রনায়কসুলভ দূরদর্শিতা দেখিয়েছেন।”

উল্লেখ্য, সরকারপ্রধানরা নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিতে পারেন। তবে এ বিষয়ে এখনও ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য আসেনি।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার কাশ্মীর ইস্যুতে ট্রাম্প একাধিকবার মধ্যস্থতার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইসলামাবাদ এতে সন্তোষ প্রকাশ করলেও নয়াদিল্লি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা মেনে নেবে না।

ট্রাম্প সম্প্রতি এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দাবি করেন, তার প্রথম মেয়াদে ভারত-পাকিস্তান এবং ইসরায়েল ও মুসলিম প্রধান কয়েকটি দেশের মধ্যে শান্তিচুক্তি (আব্রাহাম অ্যাকর্ড) সফল হয়েছে। তিনি লেখেন, “আমি যাই করি না কেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার আমি পাব না।”

জানা গেছে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনিরের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের সময় এই মনোনয়ন প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। ইসলামাবাদের বেসামরিক সরকারের সময়ে এটিই ছিল প্রথম কোনো পাকিস্তানি সামরিক নেতার হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণপ্রাপ্তি।

তবে এই মনোনয়ন উদ্যোগ পাকিস্তানে সর্বজনীনভাবে প্রশংসিত হয়নি। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের পক্ষে ট্রাম্পের অবস্থান দেশটির জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

পাকিস্তানের জনপ্রিয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক তালাত হুসেন এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “গাজায় ইসরায়েলের সুগার ড্যাডি এবং ইরানের ওপর হামলার চিয়ারলিডার কোনো পুরস্কারের প্রার্থী হতে পারে না। আর কয়েক মাস পরে যদি তিনি আবার মোদীর দুই গালে চুমু খাওয়া শুরু করেন, তাহলে আমাদের কিছুই করার থাকবে না।”

সজিব

×