ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের বিশ্লেষণ

ইরান-ইসরায়েল হামলায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা কতটুকু?

প্রকাশিত: ০৩:১২, ১৬ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৩:২১, ১৬ জুন ২০২৫

ইরান-ইসরায়েল হামলায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা কতটুকু?

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এবং পাল্টাপাল্টি হামলার প্রেক্ষাপটে উঠেছে গুরুতর প্রশ্ন—তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কি ক্রমেই ঘনিয়ে আসছে?

এই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ জানিয়েছেন, ইসরায়েলের বর্তমান সরকার বিশেষত প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নীতি আসলে দ্বিমুখী। একদিকে তিনি আমেরিকাকে টানার চেষ্টা করছেন, অন্যদিকে ইরান যেন নিউক্লিয়ার পাওয়ার হয়ে ওঠে—সেই পথও সুগম করছেন। এই পলিসি যেন “দুষ্টু লোকের কৌশল”—অন্যের ক্ষতি করে নিজের লাভ।

তিনি বলেন, “ইসরাইল অনেকটাই টিকে আছে আমেরিকার কারণে। প্রতি বছর প্রায় চার বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা পায় তারা। কিন্তু ইরানের সামর্থ্য এবং বাজার অনেক বড়। ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের সাথে আলোচনা শুরু করেছিল, এবং সেটার ধারাবাহিকতায় এখনও কিছু নেগোশিয়েশন চলছে।”

নেতানিয়াহুর ভয়?

ড. ইমতিয়াজ মনে করেন, যদি আমেরিকা-ইরান সম্পর্ক ভালো হয়ে যায়, তাহলে ইসরায়েলের জন্য তা হবে কৌশলগত বড় ক্ষতি। তাই নেতানিয়াহু চাইছেন ইরানকে এমনভাবে আক্রমণ করতে, যাতে ইরান বাধ্য হয় নিউক্লিয়ার অস্ত্র তৈরি করতে। তখন আমেরিকাকে দেখিয়ে তিনি বলবেন, “দেখুন, আমি তো বলেই এসেছি!” এতে আমেরিকার আরও কঠোর স্যাংশনের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কি আসন্ন?

তিনি সতর্ক করে বলেন, বড় যুদ্ধ শুরু হলে ক্ষতি হবে পুরো বিশ্বের। ইউরোপ, আমেরিকা এমনকি বাংলাদেশও ছাড় পাবে না। “যুদ্ধ হলে তেলের দাম বাড়বে, সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়বে, মধ্যপ্রাচ্যে থাকা আমাদের প্রবাসীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

তবে তিনি আশাবাদী যে, বড় পরিসরে যুদ্ধ হয়তো ঠেকানো সম্ভব। কারণ, ইউরোপ-আমেরিকার জনগণ এখন আগের মতো যুদ্ধ সমর্থন করছে না। ইসরায়েলের ভেতরেও নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা কমছে।

বাংলাদেশের করণীয় কী?

ড. ইমতিয়াজ বলেন, “আমরা এখনো সেই কাঠামো তৈরি করতে পারিনি যেটা দোহা বা তুরস্ক করতে পেরেছে। অথচ একসময় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ইরাক-ইরান যুদ্ধ মিটাতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন।”
তবে আজও যদি বাংলাদেশ ওআইসি, আরব বিশ্ব এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে একটি যৌথ কূটনৈতিক কাঠামো তৈরি করে, তাহলে শান্তি উদ্যোগে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

“তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ মানেই আত্মহত্যা। এটা কেউ জেনে শুনে চায় না,”—বলে মন্তব্য শেষ করেন ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।

তিনি বলেন, “এখন দেখার বিষয়, ইসরায়েলের জনগণ কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, এবং আমেরিকা-ইউরোপের জনগণ এই আগ্রাসী কৌশলকে মেনে নেয় কিনা। কারণ শান্তির পথ রুদ্ধ হলে ক্ষতি হবে সবারই।”

সূত্র: https://www.facebook.com/share/v/1FzEtJPXt6/

আসিফ

×