
ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনীর ও প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফকে স্বাগত জানিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান দুই দেশের সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত এ সফরে দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও আর্থিক সহযোগিতা জোরদার করার বার্তাই দিয়েছেন এরদোয়ান।
পাকিস্তানের প্রতি তুরস্কের আদর্শগত সমর্থন
পাকিস্তানের এই পদক্ষেপের মাঝে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ইসলামাবাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আদর্শিকভাবে। ভারতের অভিযানে শতাধিক জঙ্গি নিহত হওয়ার পর, এরদোয়ান বলেন, ‘আমি হামলায় নিহত আমাদের ভাইদের জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করছি এবং পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণ ও রাষ্ট্রের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’ এরদোয়ানের এই বার্তা আসে এমন একদিনে, যেদিন মার্কিন নিষিদ্ধঘোষিত ‘সন্ত্রাসী’ হাফিজ আব্দুর রউফ পাকিস্তানে নিহত জঙ্গিদের জানাজা পড়ান এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এরদোয়ান দীর্ঘদিন ধরেই জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের আগ্রাসন ও অবৈধ দখলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছেন।
আসিম মুনীরকে অভিনন্দন, কৌশলগত সম্পর্কের ঘোষণা
ফিল্ড মার্শাল মুনীর ও পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজের শরীফের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময় এরদোয়ান বলেন, তিনি দুই দেশের সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারত্বে’ উন্নীত করতে চান, যা পারমাণবিক সহযোগিতা পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন।
সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনায় পাকিস্তান যেসব ড্রোন ব্যবহার করেছে, তার অধিকাংশই তুরস্ক সরবরাহ করেছিল। এসব ড্রোন ভারতের সামরিক ও বেসামরিক এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালায়। তুরস্কের একটি যুদ্ধজাহাজ করাচি বন্দরে অবস্থান নেয় এবং সামরিক বিমানে অস্ত্র পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে—যদিও তুরস্ক এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সেনাবাহিনীর ভূমিকা
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বিরল হলেও, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান কূটনৈতিক সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। তুরস্ক, আজারবাইজান, ইরান ও তাজিকিস্তান সফর করছে পাকিস্তানি প্রতিনিধি দল। সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় তিনি যে অটল সমর্থন দিয়েছেন, তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
পাকিস্তানের আঞ্চলিক কৌশল
তুরস্ক ও আজারবাইজানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ায় প্রভাব বাড়াতে চাচ্ছে পাকিস্তান। অন্যদিকে, তাজিকিস্তান সফরের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদের উপস্থিতি শক্তিশালী করতে চাচ্ছে ইসলামাবাদ। উল্লেখ্য, চীন-আয়োজিত আফগানিস্তান-পাকিস্তান বৈঠকের পর কাবুল সরকার ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর অধীনে ‘চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরে’ যুক্ত হতে সম্মত হয়েছে বলে খবর রয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি।
রাকিব