
ছবি: সংগৃহীত।
পাকিস্তানের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচিত সরকারই পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। বারবার রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সেনা হস্তক্ষেপে দেশটির গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বারবার ভেঙে পড়েছে। সর্বশেষ ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা হারান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। এবার সেই একই ধরনের রাজনৈতিক চক্রান্তের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নও)।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও টিভির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিটিআই শেহবাজ শরীফ এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার আয়াজ সাদিকের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধুমাত্র প্রতিশোধ নয়, বরং বর্তমান সরকারকে রাজনৈতিক চাপের মুখে ফেলতেও একটি কৌশল।
সূত্র জানায়, আদিয়ালা কারাগারে আটক অবস্থাতেও দল পরিচালনায় সক্রিয় রয়েছেন ইমরান খান। আইনজীবী, সিনিয়র নেতা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকে তিনি অনাস্থা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছেন। এমনকি স্পিকারের পদত্যাগ দাবি করেও জনমত গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়া ভিত্তিক দল মিল্লি আওয়ামী পার্টির নেতা মাহমুদ খান আচাকজাই সম্প্রতি এই দাবির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, যা ইমরান খানের পরিকল্পনায় নতুন গতি এনেছে।
পিটিআই নেতারা এখন সরকারবিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্য গড়ে তোলার দিকেও মনোযোগ দিচ্ছেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক স্পিকার আসাদ কায়সার জানান, অনাস্থার প্রস্তাব তাদের সক্রিয় আলোচনার মধ্যে রয়েছে।
তবে ভারত-পাকিস্তান চলমান সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দলটি এখনই এই পরিকল্পনা প্রকাশ্যে আনতে চাইছে না, যাতে জনসাধারণের মাঝে ভুল বার্তা না যায়।
২০২২ সালে যিনি অনাস্থার মাধ্যমে ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন, আজ তিনিই পড়তে যাচ্ছেন অনুরূপ রাজনৈতিক চক্রান্তের মুখে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি যেন শেহবাজ শরীফের নিজের গড়া ফাঁদে নিজেকেই আটকে যাওয়ার মতো ঘটনা।
এই পরিস্থিতি শুধু প্রধানমন্ত্রী নয়, গোটা সরকারের জন্যই নতুন করে অনিশ্চয়তার ছায়া ফেলেছে। পাকিস্তানের রাজনীতি যেন সেই পুরোনো চেনা নাট্যমঞ্চ—দৃশ্যপট বদলালেও চক্রান্তের কুশীলব আর কৌশল থেকে যায় অপরিবর্তিত।
নুসরাত