
ছবিঃ সংগৃহীত
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথমবার রাশিয়া এত বড় পরিমাণে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। শনিবার গভীর রাতে চালানো এই হামলায় দেশটির কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, নিহত হয়েছেন এক তরুণী এবং আহত হয়েছেন এক শিশুসহ আরও তিনজন।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়, রাশিয়া এক রাতে মোট ২৭৩টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে, যার বেশিরভাগই লক্ষ্য ছিল কিয়েভ ও তার আশপাশের এলাকা। কিয়েভ অঞ্চলের গভর্নর জানান, হামলায় ২৮ বছর বয়সী এক নারী নিহত হয়েছেন এবং চার বছর বয়সী এক শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
এই ঘটনার মাত্র একদিন পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফোনে কথা বলার কথা রয়েছে। আলোচনা হবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিয়ে।
ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব সুমি অঞ্চলেও শনিবার একটি বাসে ড্রোন হামলা চালানো হয়, যাতে কমপক্ষে ৯ জন নিহত এবং ৭ জন আহত হন। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হয় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনা ২০২২ সালের পর প্রথম সরাসরি বৈঠক। যদিও আলোচনা কোনো বড় অগ্রগতি আনতে পারেনি, দুই দেশ বন্দি বিনিময় এবং সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করেছে।
এদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৫টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যেটি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস-এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
রবিবার ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক অঞ্চলে রাশিয়ার গোলাবর্ষণে আরও একজন নিহত এবং আটজন আহত হন। খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলেও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ নিশ্চিত করেছেন যে, ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে ফোনালাপের প্রস্তুতি চলছে। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি মনে করেন না শান্তি আলোচনা বড় কোনো অগ্রগতি আনবে, যতক্ষণ না তিনি পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব জানিয়েছেন, শনিবার তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং জানিয়েছেন, “জেলেনস্কি ধৈর্য ধরছেন, কিন্তু ট্রাম্প ক্রমেই পুতিনের প্রতি অস্থির হয়ে উঠছেন।”
শুক্রবারের আলোচনায় রাশিয়া এমন অঞ্চল দাবি করে যেগুলো এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলো একে "অগ্রহণযোগ্য" বলেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বৈঠকে নিজে না গিয়ে প্রতিনিধি দল পাঠান এবং ইউক্রেনের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, “আমি এই সংঘাতের মূল কারণগুলো নির্মূল করতে চাই।” যদিও ভিডিওটি মার্চের বলে দাবি করা হয়েছে, কিন্তু রবিবার তা প্রকাশ করায় অনেকে মনে করছেন, এটি রাশিয়ার অপরিবর্তিত অবস্থান বোঝাতে প্রকাশ করা হয়েছে।
ইতালিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সাক্ষাৎ করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও-র সঙ্গে। আলোচনায় উঠে আসে যুদ্ধের ময়দান পরিস্থিতি, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা, ভবিষ্যৎ বন্দি বিনিময় এবং শান্তি আলোচনা নিয়ে আলোচনা।
এই বৈঠকটি ছিল ফেব্রুয়ারির সেই ঘটনার পর তাদের প্রথম সাক্ষাৎ, যেখানে ওভাল অফিসে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স ইউক্রেনকে যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা না দেখানোর অভিযোগ করেছিলেন।
সূত্রঃ সিএনএন
নোভা