
ছবি: জনকণ্ঠ
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় চারআনি-মায়রামপুর সড়কটি যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই সড়কটিতে চলছে যাত্রীবাহী যানবাহন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের চারআনি হতে উলুকান্দি মোড় পর্যন্ত সড়কটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে ভাঙা রাস্তা ভরাট করলেও অল্প সময়ের মধ্যে তা আবার ভেঙে যাচ্ছে। ফলে এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কটি সংস্কারের অভাবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাবাসী ভাঙা সড়কের ওপর দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। রাস্তা ভেঙে গর্তগুলো এতটাই বড় হয়ে গেছে, যানবাহন চলাচল করছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। তাছাড়া ভাঙা সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে কোনো ধরনের সতর্কতা সংকেত টাঙানো হয়নি। এর ওপর দিয়ে যানবাহনে পারাপারের সময় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন। এছাড়া বিপাকে পড়ছেন রিকশা, অটোবাইক, মোটরসাইকেল, ভ্যানসহ বিভিন্ন বাহনের যাত্রীরা।
স্থানীয়রা জানান, অনেক আগে ধারিয়ারচর-মায়রামপুর অংশে এই সড়কটি নির্মাণ করা হয়। প্রতিদিন মানিকপুর, চারআনি, উলুকান্দি, দোয়ানি, কাপাসকান্দি, মায়রামপুরসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে শত শত মানুষ দুর্ঘটনার শঙ্কা মাথায় নিয়ে রাতদিন চলাচল করছেন। সড়ক ভেঙে বেশ কয়েকটি গর্ত ও একাংশ বসে যাওয়ায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে, ফলে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন মানুষ। তাই দ্রুত সংস্কার না করা হলে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ভুক্তভোগীরা দ্রুত সড়কের সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক বলেন, “বিগত কয়েক বছর ধরে এই রাস্তাটি ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে বর্তমানে এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এর ওপর দিয়ে রাতদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রায়শই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।” তিনি দ্রুত সড়কের সংস্কারের দাবি জানান।
এই ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী জাকারিয়া নামে এক ভ্যানচালক জানান, “কয়েক বছর ধরে দেখছি এই ভাঙা রাস্তা। ভ্যানের চাকা গর্তে পড়ে কয়েকদিন আগে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। রাতে এই অংশ আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই সড়কে নতুন চলাচলকারীরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে প্রাণহানিও ঘটতে পারে! যদি বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে কে দায় নেবে?”
স্কুলপড়ুয়া তাসফিয়া আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী জানান, “প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সড়কের গর্ত পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে যেতে হয়।”
স্থানীয় মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, “এক হাতে প্রাণ আরেক হাতে প্রয়োজন নিয়ে নিত্যদিন এই মরণফাঁদ সড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। প্রায়দিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে যারা জানেই না এখানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা, তারাই বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তাই এই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।”
রাস্তা মেরামতের বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, “রাস্তার জন্য সরকার থেকে প্রতিবছর আলাদা বরাদ্দ আসে। এবছর সেটি এখনো আসেনি। আসার পর যত দ্রুত সম্ভব মেরামত করে যাত্রীদের সমস্যা লাঘব করা হবে।”
এম.কে.