ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও নির্মিত হয়নি সেতু, বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা

মোঃ রিমন খান, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ২৩:৪৫, ১৯ মে ২০২৫; আপডেট: ২৩:৪৯, ১৯ মে ২০২৫

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও নির্মিত হয়নি সেতু, বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা

ছবি: জনকণ্ঠ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও তিতাস নদীর ওপর নির্মিত হয়নি কোনো পাকা সেতু। ফলে উপজেলার অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের হাজারো মানুষ যুগের পর যুগ একটি মাত্র ব্রিজের অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। নদীর ওপর তৈরি ৭০০ ফুট দীর্ঘ নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটিই এখন তাদের একমাত্র ভরসা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুল শিক্ষার্থী ও কৃষকরা পারাপারের সময় প্রায়ই পানিতে পড়ে আহত হচ্ছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি মাত্র ব্রিজ না থাকায় পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়নের অরুয়াইল, রানীদিয়া, কাকরিয়া, চর-কাকরিয়া, রাজাপুর, বুনিয়ারটেক, ধামাউরা, দুবাজাইল, সিঙ্গাপুর, পাকশিমুল, ফতেহপুর, পরমান্দপুর, হরিপুর, ষাটবাড়িয়া ও শিমাউরা গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রতিদিন এই বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করেন। এছাড়া কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব ও বাজিতপুর উপজেলার পাঁচ গ্রামের মানুষও এই সাঁকোর ওপর নির্ভরশীল।

সরেজমিন দেখা যায়, তিতাস নদীর ওপর নির্মিত ৭০০ ফুট দীর্ঘ সাঁকোটি পেরোতে হয় বাঁশে বাঁধা পিলার দিয়ে। স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় বিভিন্ন দপ্তরে সেতু নির্মাণের দাবি জানানো হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই স্থানীয়রাই স্বেচ্ছাশ্রম ও চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলেছেন। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে সাঁকোটি ভেঙে গেলে নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে তা পুনঃনির্মাণ করতে হয়।

সাঁকো নির্মাণে লাগে ১ হাজার বাঁশের পিলার ও প্রায় ৮ লাখ টাকা খরচ। রানীদিয়া গ্রামের ১৬ জন শ্রমিক এক মাস ধরে সাঁকো নির্মাণে অংশ নেন। তাদের একজন, নূর ইসলাম বলেন, “সাঁকোটি তৈরি করতে ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। স্থানীয়রা ভাড়া হিসেবে এই টাকা দেন।”

অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, “এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে। এত বড় বাঁশের সাঁকো বাংলাদেশে আর নেই। এখানে একটি পাকা সেতু হলে ছাত্রছাত্রী, কৃষক ও ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। আমরা এই স্থানে পাকা সেতু নির্মাণের জোর দাবি জানাচ্ছি।”

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ আনিছুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, “সেতুটি একটি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক সাইট পরিদর্শন করেছেন এবং সব জরিপ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে কাজ প্রক্রিয়াধীন।”

শহীদ

×