ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

আমেরিকাকেও পাত্তা দেবে না চীনের আকাশসীমায় রাজত্বকারী যুদ্ধবিমান জে-৩৫!

প্রকাশিত: ২১:৪৯, ১২ মে ২০২৫

আমেরিকাকেও পাত্তা দেবে না চীনের আকাশসীমায় রাজত্বকারী যুদ্ধবিমান জে-৩৫!

ছবিঃ সংগৃহীত

আকাশসীমায় ভারতকে পরাস্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে চীনের জে-১০সি যুদ্ধবিমান। এই অভূতপূর্ব সাফল্যের পর চীনের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে সামরিক শক্তিধর দেশগুলোতে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। এরই মধ্যে আরেকটি বড় চমক নিয়ে হাজির হলো চীনা বাহিনী। দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বহুল প্রতীক্ষিত পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান জে-৩৫ সামনে আনল শি জিনপিং-এর সরকার। চীনের এই সাফল্যে রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর।

সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের আকাশপথে সংঘর্ষে পাকিস্তান চীনা নির্মিত জে-১০সি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের দুটি রাফায়েল জেট ভূপাতিত করেছে। এই ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে—যদি জে-১০সি এতটাই কার্যকর হয়, তবে চীনের আরও উন্নত জে-৩৫ যুদ্ধবিমান আসলে কতটা ভয়ঙ্কর?

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জে-৩৫ দেখতে অনেকটাই মার্কিন লকহিড মার্টিনের তৈরি এফ-৩৫ এর মতো। তবে একটি বড় পার্থক্য রয়েছে—এফ-৩৫ যেখানে এক ইঞ্জিনচালিত, সেখানে জে-৩৫-এ রয়েছে দুটি ইঞ্জিন। ধারণা করা হচ্ছে, এতে চীনের নিজস্ব উন্নত ইঞ্জিন WS-9 ব্যবহৃত হয়েছে, যা আগের WS-13 ইঞ্জিনের চেয়ে বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন, দ্রুতগামী এবং দীর্ঘক্ষণ উড্ডয়ন সক্ষম।

এই যুদ্ধবিমানটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এর স্টেলথ ক্ষমতা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি লো-অবজারভেবিলিটি প্ল্যাটফর্ম—অর্থাৎ রাডারে ধরা পড়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। যদিও এর সেন্সর, রাডার বা ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেনি চীন, তবুও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের ধারণা, জে-৩৫ শত্রুপক্ষের নজর এড়িয়ে গভীরে প্রবেশ করে আক্রমণ চালাতে সক্ষম।

এছাড়া, জে-৩৫ এর গঠন তুলনামূলকভাবে হালকা ও ছোট, যা এটিকে বিমানবাহী রণতরীতে ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী করে তোলে। এটি চীনের দ্বিতীয় স্টেলথ যুদ্ধবিমান। প্রথমটি ছিল জে-২০, যা ২০১৬ সালে পিপলস লিবারেশন আর্মির বহরে যুক্ত হয়।

চায়না ইন্টারন্যাশনাল অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস এক্সিবিশন-এ প্রথমবার জনসম্মুখে উড্ডয়ন করে জে-৩৫। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শেনইয়াং এয়ারক্রাফট কর্পোরেশন এটিকে তাদের আগের জে-৩১ প্রোটোটাইপের উন্নত সংস্করণ হিসেবে উপস্থাপন করে। উল্লেখ্য, জে-৩১ প্রথমবার উড়েছিল ২০১২ সালে।

চীন আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমানের নকশা অনুকরণে পরিচিত। উদাহরণস্বরূপ, জে-২০-এর সঙ্গে এফ-২২ র‍্যাপটার এবং জে-১০সি-এর সঙ্গে এফ-১৬-এর বাহ্যিক গঠনে মিল রয়েছে।

জে-৩৫ এখনো সরাসরি যুদ্ধে অংশ না নিলেও, এর কৌশলগত গুরুত্ব ও প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিরক্ষা ভারসাম্যে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ইমরান

×