
দিয়ারবাকিরে কারাবন্দি কুর্দি নেতা আবদুল্লাহ ওকলানের ছবি হাতে সমর্থকরা
তুরস্কের সঙ্গে চার দশক ধরে চলা সশস্ত্র সংগ্রামের অবসান ঘটিয়ে স্বেচ্ছায় নিজেদের আনুষ্ঠানিক বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। পিকেকের ঘনিষ্ঠ ফিরাত নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর আলজাজিরার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চার দশক ধরে চলমান সহিংসতার অবসান ঘটাতে আঙ্কারার সঙ্গে নতুন শান্তি উদ্যোগের অংশ হিসেবে একটি কংগ্রেস আয়োজনের পর বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হলো। এর কয়েক দিন আগে উত্তর ইরাকে একটি কংগ্রেস আয়োজন করে দলটি। শুক্রবার হওয়া ওই কংগ্রেসের পর সোমবার দলটি বিলুপ্ত এবং সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধের ঘোষণা এল। এর মাধ্যমে তুরস্কে চার দশক ধরে চলা সংঘাত বন্ধ হতে যাচ্ছে।
দলটি বলছে, তারা একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যা খুব দ্রুতই জনগণকে জানানো হবে। ফিরাত নিউজ এজেন্সি জানায়, শুক্রবারের ওই কংগ্রেসে পিকেকে নেতা আবদুল্লাহ ওকলানের দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রস্তাবনা সংবলিত একটি বিবৃতি পাঠ করা হয়। পিকেকের বিলুপ্তির ঘোষণার পর তুর্কি সরকারের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে কারাবন্দি কুর্দি নেতা আবদুল্লাহ ওকালান তার অনুসারী যোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণের নির্দেশ দেন।
সেই সঙ্গে তুর্কি রাষ্ট্রের সঙ্গে কয়েক দশকের সংঘাতের অবসানের লক্ষ্যে পিকেকেকে বিলুপ্ত করার আহ্বানও জানান। ১৯৮৪ সালে কুর্দিদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই শুরু করে পিকেকে। সেই লড়ইয়ে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। পরে কুর্দিরা তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী লক্ষ্য থেকে সরে এসে দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়ায় একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং কুর্দিদের জন্য বৃহত্তর অধিকারের দাবি জানাতে থাকে।
পিকেকের সঙ্গে যুক্ত গোষ্ঠীগুলো তুরস্কে মাঝেমধ্যেই হামলা চালায়। তারা সাধারণত গাড়ি বোমা ও অন্যান্য উপায় ব্যবহার করে তুরস্কের সেনা ও সামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা করে থাকে। তুরস্কের পাশাপাশি সিরিয়া ও ইরাকেও এই গোষ্ঠীর সদস্যদের অবস্থান রয়েছে। তুরস্ক ও এর মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো পিকেকেকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।