ছবি: সংগৃহীত।
চীনের বিভিন্ন শহর ও প্রদেশের শিশুদের মধ্যে সম্প্রতি যে ‘রহস্যময়’ নিউমোনিয়া দেখা দিয়েছে, সেটির ‘কার্যকর নিয়ন্ত্রণ’ রয়েছে বলে দাবি করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ কার্যালয়ে সাংবাদিকের এ তথ্য অবহিত করেছেন তিনি।
বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকের আগে আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ওয়াং ই বলেন, ‘সম্প্রতি চীনের শিশুদের মধ্যে এক ধরনের ফ্লু ছড়িয়ে পড়তে দেখছি আমরা। আসলে এটা খুবই সাধারণ একটি অসুখ এবং বিশ্বের অনেক দেশেই এ ধরনের ফ্লু দেখা যায়। বর্তমানে এটি আমাদের কার্যকর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
আরও পড়ুন : আরও ৩০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি
গত অক্টোবরের শেষ দিক থেকে বেইজিং এবং লিয়াওনিংয়ের শিশুদের মধ্যে রহস্যজনক নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। রোগটিকে রহস্যজনক বলার কারণ হলো— নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা যেমন শ্বাসকষ্টে ভোগেন, অজানা এই রোগটিতে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যেও এ উপসর্গের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে নিউমোনিয়ার রোগীদের শ্বাসকষ্ট ছাড়াও কফ ও বুকে ঘড়ঘড় শব্দের মতো উপসর্গ দেখা যায়। আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি।
তবে শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি উচ্চমাত্রার জ্বরের মতো উপসর্গও রয়েছে আক্রান্ত শিশুদের। এছাড়া শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আক্রান্ত প্রত্যেক শিশুর ফুসফুসে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ফোসকা বা ফুস্কুড়ি পরিলক্ষিত হয়েছে। জলবসন্ত রোগে মানুষের শরীরে যেমন ফোসকা ওঠে, সেসবের সঙ্গে মিল রয়েছে সেগুলোর।
গত ১২ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশজুড়ে প্রতিদিনই বাড়ছে এই রোগটিতে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা। করোনাকালে জনগণ যেসব বিধিনিষেধ মেনে চলতেন, অজানা এই নিউমোনিয়ার ছড়িয়ে পড়া রোধ করতেও দেশের লোকজনকে সেসব বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানান কর্মকর্তারা।
এদিকে, চীনে এই নতুন নিউমোনিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে নতুন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বিশ্বজুড়ে। কারণ বৈশ্বিক করোনা মহামারির ভয়াবহ স্মৃতি এখনও ফিকে হয়ে যায়নি। শ্বাসতন্ত্রের সেই প্রাণঘাতী রোগটি প্রথম শানক্ত হয়েছিল চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী শহর উহানে এবং শনাক্ত হওয়ার পর প্রাথমিক পর্যায়ে করোনাকেও ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া’ বলে উল্লেখ করেছিল চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গত সপ্তাহে চীনের কাছে এই নিউমোনিয়া বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিল জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত অঙ্গসংগন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সেই অনুযায়ী তা সরবরাহও করেছে চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ন্যাশনাল হেলথ কমিশন।
বুধবারের ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের মিথস্ক্রিয়া সবসময়ই চলমান রয়েছে এবং কোনো কারণেই তাতে ছেদ পড়ার আশঙ্কা নেই। যারা (এই রোগ সম্পর্কে তথ্য নিতে) চীনে আসতে চান, তাদের সবাইকে আমরা স্বাগত জানাব।’
রয়টার্স
টিএস