ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

উপসর্গহীন এই রোগেই প্রতিবছর প্রাণ হারাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ২৭ জুলাই ২০২৫

উপসর্গহীন এই রোগেই প্রতিবছর প্রাণ হারাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ

ছবি: সংগৃহীত

অনেকের কাছেই ‘ডিসলিপিডেমিয়া’ শব্দটি অপরিচিত হতে পারে, কিন্তু এই নীরব রোগটি প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য বলছে, প্রতিবছর উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে মৃত্যু হয় প্রায় ২৬ লাখ মানুষের এবং ৩ কোটির বেশি মানুষকে ঠেলে দেয় দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায়।

কী এই রোগ?

ডিসলিপিডেমিয়া মূলত এক ধরনের কোলেস্টেরলজনিত বিপর্যয়, যেখানে রক্তে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় লিপিড বা চর্বির পরিমাণ। এর ফলে ধমনি শক্ত হয়ে যাওয়া, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক-এর মতো প্রাণঘাতী সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কেন এত বিপজ্জনক?

এই রোগের সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো—প্রথমদিকে কোনও লক্ষণই প্রকাশ পায় না। শরীরে ধীরে ধীরে জাল বিস্তার করে, আর ততদিনে ধমনি শক্ত হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী বুঝতেই পারেন না যতক্ষণ না বড় কোনও ঘটনা—যেমন হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক—ঘটে।

কারা বেশি ঝুঁকিতে?

  • যাদের স্থূলতা আছে
  • ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা
  • পরিবারে উচ্চ কোলেস্টেরলের ইতিহাস রয়েছে এমন ব্যক্তিরা

এদের ক্ষেত্রে নিয়মিত লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করা জরুরি, যাতে প্রাথমিক পর্যায়েই রোগ ধরা পড়ে।

কী কী উপসর্গ দেখে সাবধান হবেন?

যদিও ডিসলিপিডেমিয়া সাধারণত লক্ষণহীন, কিছু সূক্ষ্ম উপসর্গ থাকতে পারে—

  • বুক ধড়ফড় করা বা ব্যথা
  • শ্বাসকষ্ট বা হাঁপ ধরা
  • অতিরিক্ত ক্লান্তি
  • অল্প কষ্টেই হাঁপিয়ে যাওয়া
  • অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বা উচ্চ রক্তচাপ

এই লক্ষণগুলোর মধ্যে একাধিক থাকলে, দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি।

কোন মাত্রাকে স্বাভাবিক ধরা হয়?

বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাভাবিক রক্তের লিপিড মাত্রা হওয়া উচিত—

  • LDL (খারাপ কোলেস্টেরল): ১০০ mg/dL বা কম
  • HDL (ভাল কোলেস্টেরল):
  • পুরুষদের ক্ষেত্রে: ৪০ mg/dL-এর বেশি
  • নারীদের ক্ষেত্রে: ৫০ mg/dL-এর বেশি
  • ট্রাইগ্লিসারাইড: ১৫০ mg/dL-এর নিচে
  • মোট কোলেস্টেরল: ২০০ mg/dL-এর নিচে

প্রতিরোধই সবচেয়ে বড় অস্ত্র

ভয়ের কিছু নেইচিকিৎসকেরা বলছেন, সময়মতো রোগ ধরা পড়লে ওষুধ এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে ডিসলিপিডেমিয়া সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

নিয়মিত শারীরিক কসরত, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং ধূমপান এড়িয়ে চলাই এই রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

বি.দ্র.: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যভিত্তিক। কোনও চিকিৎসা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 

সূত্র: https://tv9bangla.com/health/millions-of-people-are-losing-their-lives-every-year-due-to-this-asymptomatic-disease-how-to-know-hasnt-it-taken-root-in-your-body-too-1224497.html

রাকিব

×