
দিনে যতটা ব্যায়ামই করুন, ডায়েট যতই কঠিন হোক—যদি ঠিকঠাক ঘুম না হয়, তবে ওজন কমার স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে দিচ্ছেন: ঘুম ওজন কমানোর এক অবিচ্ছেদ্য শর্ত।
ঘুম ও ওজন: সম্পর্ক কী?
আমাদের শরীরের হরমোন নিঃসরণ, বিপাকক্রিয়া এবং ক্ষুধার সিগন্যাল ঘুমের ওপর নির্ভর করে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে দু'টি গুরুত্বপূর্ণ হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়:
ঘ্রেলিন (Ghrelin): ক্ষুধা বাড়ায়। ঘুম কম হলে এটি বেড়ে যায়।
লেপটিন (Leptin): পেট ভরা অনুভব করায়। ঘুম না হলে এটি কমে যায়।
ফলে শরীর সারাদিন ‘ক্ষুধার্ত’ ভাব ধরে রাখে, এবং আপনি অবচেতনভাবে বেশি খেতে থাকেন।
কতক্ষণ ঘুম জরুরি?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিভিন্ন ঘুম বিশেষজ্ঞদের মতে:
প্রাপ্তবয়স্কদের: দিনে ৭–৯ ঘণ্টা
কিশোরদের: ৮–১০ ঘণ্টা
শিশুদের: ১০–১৪ ঘণ্টা
এ সময়টুকু না ঘুমালে শরীর নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে না, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে ওজন ও বিপাক ব্যবস্থায়।
ঘুমের অভাবে কী কী ক্ষতি হয়?
অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে
মেটাবলিজম (বিপাকক্রিয়া) ধীর হয়ে যায়
ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স বাড়ে, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি হয়
মুড ও মানসিক অবসাদ বেড়ে গিয়ে কমে যায় ব্যায়ামের আগ্রহ
ঘুম ভালো রাখতে যা করবেন
1. প্রতি রাতেই নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাবেন
2. ঘুমের আগে মোবাইল ও স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন
3. ঘরের আলো কমিয়ে রাখুন
4. হালকা রাতের খাবার গ্রহণ করুন
5. ঘুমের পরিবেশ ঠাণ্ডা ও শান্ত রাখুন
ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোফিজিওলজিস্ট ডা. নাজিয়া হোসেন বলেন, “ঘুম কোনো বিলাসিতা নয়, বরং শরীর ও মনের জন্য এটি অত্যাবশ্যক। বিশেষত ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ঘুম এক নম্বর ওষুধের মতো কাজ করে।”
Mily