
ছবি: সংগৃহীত
মাইক্রোসফট সম্প্রতি নিশ্চিত করেছে যে উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৬০ দিন পর পুরনো সব সিস্টেম রিস্টোর পয়েন্ট মুছে দিচ্ছে। এই নতুন নীতির কারণে ব্যবহারকারীদের সিস্টেম ব্যাকআপ নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, নিয়মিত নতুন রিস্টোর পয়েন্ট তৈরি করে রাখতে হবে যাতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে পুরনো সেটিংয়ে ফিরে যাওয়া যায়।
গত কয়েক বছর ধরে মাইক্রোসফট ব্যবহারকারীদের উইন্ডোজ ১০ থেকে উইন্ডোজ ১১-এ আপগ্রেড করতে উৎসাহিত করছে। তবে এই নতুন সিস্টেম রিস্টোর পলিসি উইন্ডোজ ১০-এর চেয়ে কম সুবিধাজনক বলে মনে করা হচ্ছে। উইন্ডোজ ১০-এ রিস্টোর পয়েন্ট ৯০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকত, যা এখন ৬০ দিনে সীমিত করা হয়েছে। প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি উইন্ডোজ ১১-এ আপগ্রেড করতে ব্যবহারকারীদের বাধ্য করার আরেকটি কৌশল হতে পারে।
ব্যবহারকারীরা সহজেই নিজেরা সিস্টেম রিস্টোর পয়েন্ট তৈরি করতে পারবেন। এর জন্য স্টার্ট মেনুতে গিয়ে "Create a restore point" লিখে সার্চ করতে হবে। এরপর সিস্টেম প্রপার্টিজ থেকে সংশ্লিষ্ট ড্রাইভ সিলেক্ট করে নতুন রিস্টোর পয়েন্ট তৈরি করা যাবে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, প্রতি দুই মাসে অন্তত একবার নতুন রিস্টোর পয়েন্ট তৈরি করা উচিত।
এদিকে উইন্ডোজ ১১-এর নতুন রিকল ফিচার নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। এই এআই-চালিত ফিচার ব্যবহারকারীর প্রতিটি কার্যক্রম রেকর্ড করে রাখে, যাতে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। তবে এই ফিচার শুধুমাত্র কোপাইলট+ পিসিতেই কাজ করবে, যা অনেক পুরনো কম্পিউটারে উপলব্ধ নয়।
প্রযুক্তি বিশ্লেষক ডেভিড ফেলান সতর্ক করেছেন, "১৪ অক্টোবর ২০২৫-এর পর উইন্ডোজ ১০-এর জন্য নিয়মিত সিকিউরিটি আপডেট বন্ধ হয়ে যাবে। ব্যবহারকারীদের এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে - হয় উইন্ডোজ ১১-এ আপগ্রেড করবেন, নতুবা $৩০ দিয়ে এক্সটেন্ডেড সাপোর্ট কিনে নেবেন।"
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার উইন্ডোজ ১১-এর জন্য প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করে না। ফলে অনেক ব্যবহারকারীকে বাধ্য হয়ে নতুন হার্ডওয়্যার কিনতে হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে মাইক্রোসফট ব্যবহারকারীদের নতুন হার্ডওয়্যার কেনার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর হলো, উইন্ডোজ ১০ এখনও নিরাপদ। তবে অক্টোবরের পর থেকে এটির সিকিউরিটি ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই যারা উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করছেন, তাদের জন্য দুটি বিকল্প - হয় দ্রুত উইন্ডোজ ১১-এ আপগ্রেড করা, নতুবা এক্সটেন্ডেড সাপোর্ট কিনে নেওয়া।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, "এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার কম্পিউটারের সামর্থ্য যাচাই করে নিন। উইন্ডোজ ১১-এর সব ফিচার উপভোগ করতে হলে আপনাকে হয়তো নতুন হার্ডওয়্যার কিনতে হতে পারে।"
মাইক্রোসফটের এই নতুন নীতিতে ব্যবহারকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ নতুন টেকনোলজি গ্রহণ করতে আগ্রহী হচ্ছেন, আবার কেউ কেউ বাধ্য হয়ে পরিবর্তন মেনে নিচ্ছেন। প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী কয়েক মাসে উইন্ডোজ ১১-এর ব্যবহারকারী সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়তে পারে। তথ্যসূত্র: ফোর্বস
সাব্বির