ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

বাড়িটি ছিল অপহরণ-নির্যাতনের ঘাঁটি

কুষ্টিয়ায় টর্চার সেলের সন্ধান: চক্রের মূলহোতাসহ আটক ৫, বিপুল অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার

সাগর হোসেন, কুষ্টিয়া

প্রকাশিত: ০৯:২৪, ২৫ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৯:২৫, ২৫ জুন ২০২৫

কুষ্টিয়ায় টর্চার সেলের সন্ধান: চক্রের মূলহোতাসহ আটক ৫, বিপুল অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আইলচারা বাজার সংলগ্ন একটি তিনতলা বাড়ি থেকে একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ দল। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দিবাগত গভীর রাতে পরিচালিত এই অভিযানে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট ও ফেনসিডিল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আটককৃতরা দীর্ঘদিন ধরে এই ভবনটি অপরাধের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। তারা বাড়িটিকে একটি টর্চার সেল বা নির্যাতনকেন্দ্রে রূপান্তর করেছিল, যেখানে অপহরণ করে ধরে আনা ব্যক্তিদের উপর নির্যাতন চালানো হতো। অপহৃতদের পরিবার থেকে আদায় করা হতো মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ। টাকা না পেলে দেওয়া হতো খুনের হুমকি।

আটককৃত সন্ত্রাসীরা হলো কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে ইমরান খান মানিক, বড় আইলচারা এলাকার মৃত মোজাম ডাক্তারের ছেলে রনি, মিরপুর থানার পোড়াদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটদহ এলাকার বাসিন্দা সজীব, একই ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রামের রাব্বি এবং একই গ্রামের আরও একজন সক্রিয় সদস্য শাকিল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মানিকের নেতৃত্বে এই চক্র এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভয় ও ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছিল। চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি ও সন্ত্রাস ছিল তাদের নিত্যকার কাজ। বহুবার অভিযোগ করেও ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে পারেনি।

যৌথ অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে এবং অনেকে বাইরে এসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অপহরণ সংক্রান্ত ধারায় একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।

এই অভিযান শুধু একটি সন্ত্রাসী চক্র ভাঙার ঘটনা নয়, এটি কুষ্টিয়াবাসীর জন্য একটি বার্তা, অপরাধ যত বড়ই হোক, আইনের হাত থেকে কেউ রেহাই পাবে না। স্থানীয়দের সহায়তায় এ ধরনের অভিযান আরও কার্যকরভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সাগর হোসেন/রাকিব

×