
অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন আর অলসতা—এই তিনটি অভ্যাসই আজকের তরুণ সমাজকে ঠেলে দিচ্ছে একটি নীরব কিন্তু মারাত্মক রোগের দিকে: ফ্যাটি লিভার। তবে সুখবর হচ্ছে, প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে মাত্র এক মাসের মধ্যেই এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব!
বিশ্বখ্যাত লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. শিবকুমার সারিন জানিয়েছেন, লাইফস্টাইলে কিছু সহজ পরিবর্তন আনলেই Stage 1 বা Stage 2 ফ্যাটি লিভার সম্পূর্ণভাবে রিভার্স করা সম্ভব।
চলুন জেনে নেওয়া যাক তাঁর পরামর্শে কীভাবে মাত্র ৩০ দিনেই ফ্যাটি লিভারকে বিদায় জানানো যায়—
১. ডায়েটেই বড় সমাধান
ডা. সারিন বলছেন, লিভারের চর্বি কমাতে অতিরিক্ত ক্যালোরি, মিষ্টি ও ফাস্ট ফুড একেবারেই বাদ দিতে হবে। বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো খাবার নয়, বরং খেতে হবে টাটকা ফল, সবুজ শাকসবজি, হোল গ্রেইন ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার।
২. সপ্তাহে একদিন উপবাস!
তিনি পরামর্শ দেন সপ্তাহে অন্তত একদিন উপবাস করতে। এতে শরীরের টক্সিন বেরিয়ে যায় এবং লিভারের কাজ করার চাপ কমে। তবে মনে রাখতে হবে, উপবাসে পানি ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেন বজায় থাকে।
৩. প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম
দৌড়, সাঁতার বা দ্রুত হাঁটার মতো কার্ডিও এক্সারসাইজ প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪০ মিনিট করুন। এতে শরীরের ফ্যাট কমবে, রক্তসঞ্চালন বাড়বে এবং লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে।
৪. অ্যালকোহল ও ধূমপান একেবারে নয়
ফ্যাটি লিভারের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অ্যালকোহল। একইভাবে ধূমপানও লিভারের ক্ষতি করে। তাই এই দুইটি একেবারেই এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।
৫. পর্যাপ্ত পানি পান
প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। এতে লিভার পরিষ্কার থাকে ও শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়া আরও কার্যকর হয়।
৬. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খান
আঙ্গুর, লেবু, কমলা, গাজর ও পালংশাকের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার লিভারকে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
৭. ব্ল্যাক কফি ও মানসিক প্রশান্তি
চিকিৎসকের মতে, ব্ল্যাক কফি লিভার ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি স্ট্রেস কমানোও জরুরি। এজন্য প্রতিদিন যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা প্রণায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৮. নিয়মিত চেকআপ করুন
যারা ইতোমধ্যেই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত, তাদের প্রতি মাসে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে রিপোর্ট পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. সারিন।
জীবনযাত্রায় ছোট ছোট পরিবর্তন আনলেই লিভারকে আগের মতো সুস্থ ও শক্তিশালী করা সম্ভব। এই সহজ টিপসগুলো মেনে চললে মাত্র এক মাসেই ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
মিমিয়া