
ছবি: সংগৃহীত
এই স্বাস্থ্যকর টনিক তৈরি করা খুবই সহজ। নিচে দেওয়া হলো একটি সাধারণ রেসিপি:
১. ১-২টি তাজা আমলা ও ১ ইঞ্চি পরিমাণ আদা নিন।
২. অল্প পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন।
৩. ছেঁকে রস বের করে নিন, যাতে আঁশ না থাকে।
৪. চাইলে স্বাদ বাড়াতে এক চিমটি বিট লবণ বা সামান্য মধু মেশাতে পারেন।
৫. প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন সর্বোচ্চ উপকার পেতে।
আমলকী-আদার শর্ট কীভাবে শরীরের উপকারে আসে?
আমলকী ও আদা একসাথে শরীরে শক্তি জোগায়, রোগ প্রতিরোধ করে এবং নানান শারীরিক সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়র বিপরীতে এই প্রাকৃতিক শর্ট দীর্ঘস্থায়ী শক্তি দেয় এবং শরীরকে অভ্যন্তরীণভাবে ঠিক রাখে। নিচে এই অভ্যাসের ৬টি প্রধান উপকারিতা তুলে ধরা হলো:
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আমলকী হলো ভিটামিন সি-এর অন্যতম প্রধান উৎস, যা কমলার চেয়েও প্রায় ২০ গুণ বেশি ভিটামিন সি সরবরাহ করে। এটি শরীরে সাদা রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরক্ষা দেয়।
অন্যদিকে আদার মধ্যে থাকা জিঞ্জারল উপাদান প্রদাহ কমায় এবং ঠান্ডা, কাশি ও সিজনাল অসুখ প্রতিরোধে সহায়ক।
২০১৭ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, আমলকী নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।
২. হজমে সহায়তা করে
অম্বল বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভুগছেন? আমলকী ও আদা আপনার পরিপাকতন্ত্রের সবচেয়ে ভালো বন্ধু।
আমলকী হজম এনজাইম উৎপাদনে সহায়তা করে, যাতে খাবার সহজে হজম হয়। আদা গ্যাস কমায় ও পেট ফোলাভাব দূর করে।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই শর্ট পান করলে পাচনতন্ত্র পরিষ্কার হয়ে সারাদিনের জন্য প্রস্তুত থাকে।
৩. শরীরের ভেতর থেকে পরিষ্কার করে
আমলকী প্রাকৃতিক ডাইইউরেটিক হিসেবে কাজ করে — এটি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরের টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং কিডনি ও লিভার ভালো রাখে।
আদা বিপাকক্রিয়া বাড়ায়, ফলে লিভার টক্সিন দ্রুত ভেঙে ফেলতে পারে।
এই দুয়ের সংমিশ্রণ দেহের অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার করে, যার ফলে শরীর হালকা ও সতেজ অনুভব হয়।
৪. ত্বক উজ্জ্বল ও চুল মজবুত করে
আমলকীর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান, বিশেষ করে ভিটামিন সি, ত্বকে বয়সের ছাপ, রুক্ষতা ও বলিরেখা প্রতিরোধ করে। এটি কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বককে করে তোলে টানটান ও যৌবনদীপ্ত।
আদা ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং ব্রণের ব্যাকটেরিয়া দমন করে।
আমলকীর পুষ্টিগুণ চুলের গোড়া মজবুত করে, খুশকি কমায় এবং চুল পাকা প্রতিরোধ করে।
২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আমলা খাওয়ায় ত্বকের ইলাস্টিসিটি ও হাইড্রেশন বাড়ে এবং বলিরেখা কমে।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
যারা ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের জন্য এই শর্ট অত্যন্ত উপকারী।
আমলকী মেটাবলিজম বাড়িয়ে দিনভর হজমশক্তি সক্রিয় রাখে এবং চর্বি জমা কমায়।
আদা শরীরে তাপ উৎপাদনের প্রক্রিয়া বাড়িয়ে (থার্মোজেনেসিস) ক্যালোরি পোড়াতে সহায়তা করে।
উপরন্তু, আমলায় থাকা উচ্চ মাত্রার ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে, যার ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে।
৬. হৃদযন্ত্র রাখে সুস্থ ও সক্রিয়
হৃদযন্ত্রের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি, এবং এই শর্ট সেই কাজে অসাধারণভাবে সহায়ক।
আমলকী খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়, ফলে ধমনিতে ব্লকেজ হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
আদার প্রদাহবিরোধী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
আবির