ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অন্ত্র ক্যান্সারের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ যা হয়তো আপনার নজর এড়িয়ে যাচ্ছে! এখনই সতর্ক হোন

প্রকাশিত: ১৪:১০, ২ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৪:১১, ২ জুন ২০২৫

অন্ত্র ক্যান্সারের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ যা হয়তো আপনার নজর এড়িয়ে যাচ্ছে! এখনই সতর্ক হোন

আন্ত্রের ক্যান্সার বা বাওয়েল ক্যান্সার শুরুতে অনেক সময় এমন কিছু উপসর্গ দেখায় যা সাধারণ রোগের সঙ্গে মিল রয়েছে। তাই অনেকে এদের তেমন গুরুত্ব দেন না। তবে এসব লক্ষণ উপেক্ষা করলে সমস্যা গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। চলুন দেখে নিই অন্ত্র ক্যান্সারের পাঁচটি এমন লক্ষণ যেগুলো প্রাথমিকভাবে ভুল বুঝে সাধারণ অসুস্থতা মনে করা হয়।

মলমূত্রের অভ্যাসে পরিবর্তন
আপনার স্বাভাবিক মলত্যাগের নিয়মে যদি কোনো পরিবর্তন আসে, তা অবহেলা করা উচিত নয়। কয়েক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া বা কোষ্টকাঠিন্য থাকা সতর্কতার ইঙ্গিত। অনেক সময় ডায়রিয়া বা কোষ্টকাঠিন্যকে ডায়েট পরিবর্তন, মানসিক চাপ বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেই ভাবা হয়, কিন্তু এ ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া প্রয়োজন। মলত্যাগের পরেও যেনো অন্ত্র খালি না হয় এমন অনুভূতিও গুরুত্বসহকারে দেখা দরকার। ক্যান্সারের কারণে মলত্যাগে এই রকম পরিবর্তন আসতে পারে, যেমন ডায়রিয়া এবং কোষ্টকাঠিন্যের মাঝে বারবার পরিবর্তন।

মলে রক্ত থাকা
মলে রক্ত পাওয়া কখনো ভালো লক্ষণ নয়। উজ্জ্বল লাল বা গাঢ় রঙের রক্ত প্রায়শই হেমোরয়েডস বা ছোট্ট চিরা ভাবেই ভুল বোঝা হয়। যদিও এগুলো সাধারণ কারণ হতে পারে, তবে অন্ত্র ক্যান্সারের সম্ভাবনাও এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে যদি রক্তপাত বারবার হয় অথবা ব্যথার সঙ্গে থাকে এবং মলত্যাগের অভ্যাস বদলে যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

অপ্রত্যাশিত ওজন কমে যাওয়া
হঠাৎ করে কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া অনেকেই আনন্দের সংবাদ মনে করেন কিংবা ডায়েট পরিবর্তনের ফল হিসেবে ধরে নেন। কিন্তু কোনো চেষ্টা ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া দুশ্চিন্তার বিষয়। অন্ত্র ক্যান্সার শরীরের পুষ্টি শোষণ কমিয়ে দিতে পারে অথবা শরীরের অতিরিক্ত শক্তি খরচের কারণ হতে পারে, যা ওজন কমার অন্যতম কারণ।

অবসাদ ও দুর্বলতা
দৈনন্দিন জীবনে ক্লান্তি ও দুর্বলতাকে আমরা প্রায় মানসিক চাপ, অনিদ্রা বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলি। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি, যা বিশ্রামের পরেও কমে না, সেটি অন্ত্র ক্যান্সারের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হতে পারে। অন্ত্রে রক্তপাতের কারণে রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) সৃষ্টি হলে শরীর অবিরাম ক্লান্তি অনুভব করে।

পেটে বা মলদ্বারে গঠনীয় কমরূপ বস্তু পাওয়া
পেটে অথবা মলদ্বারে কোনো গজানো বা গাঠনিক পরিবর্তন লক্ষ্য করলে তা হালকাভাবে নেয়া উচিত নয়। অনেক সময় এটি সাধারণ ফোলা ভাবেও দেখা হয়, কিন্তু এটি অন্ত্র বা মলদ্বারে ক্যান্সার জনিত টিউমারও হতে পারে। এই ধরনের উপসর্গ থাকলে অতিরিক্ত পরীক্ষা যেমন ইমেজিং বা কোলোনোস্কোপি করানো জরুরি।

এছাড়াও অন্ত্র ক্যান্সারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে পেটে টানপড়ন, অস্বস্তি, ফোলাভাব, কোষ্টকাঠিন্য বা বাতাস আটকে যাওয়া এবং বমি বমি ভাব।

চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি
এই সব লক্ষণ যদি তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে থাকে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সময়মতো সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করা হলে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা অন্ত্র ক্যান্সার শনাক্তে সহায়ক এবং রোগের প্রাথমিক ধাপে চিকিৎসার সুযোগ দেয়।

সাধারণ মনে হলেও আপনার শরীরের এ ধরনের কোনো পরিবর্তন অবহেলা করবেন না। সতর্কতা ও দ্রুত পদক্ষেপই সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি।

 


সূত্র:https://tinyurl.com/yv4cdzfh

আফরোজা

×