
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় ভিন্নধর্মী চিন্তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে মঙ্গলবার আখানগর বাজার ও বুড়ির বাঁধ এলাকা থেকে। চায়ের দোকানে রঙিন টেলিভিশন কিংবা ক্যারাম বোর্ডের আড্ডা, সেখানেই এবার নতুন সংযোজন, অঙ্কের সূত্র।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলামের প্রত্যাশা এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা একদিন বড় পরিবর্তনের সূচনা করবে। উদ্দেশ্য কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েরা যেন আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে শেখার সুযোগ পায়।
“চায়ের দোকানে অনেক সময় কিশোররা দীর্ঘ সময় কাটায়। আমরা ভাবলাম, যদি এই সময়টুকু একটু কাজে লাগানো যায়, তাহলে শিক্ষার বিস্তারে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।” বলেন ইউএনও খাইরুল ইসলাম।
দোকানগুলোর দেয়ালে সাঁটানো হচ্ছে সাধারণ গণিতের সূত্র, যা প্রতিদিন চোখে পড়বে দোকানে বসা কিশোরদের। ধাপে ধাপে পুরো উপজেলায় চলবে এই কার্যক্রম।
প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে দুটি বাজারে চালু হলেও, প্রশাসনের পরিকল্পনা রয়েছে এটি পুরো সদর উপজেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ইউনিয়নের প্রত্যন্ত বাজারগুলোতেও এই শিক্ষামূলক ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়া হবে।
স্থানীয় দোকানিরাও এই উদ্যোগে খুশি। আখানগর বাজারের চা দোকানি আনোয়ার হোসেন বলেন, “আগে ছেলেরা এসে শুধু মোবাইল নিয়ে বসে থাকত। কেউ কেউ ক্যারাম বোর্ড খেলতো আর টিভি দেখতো। এখন অন্তত কিছু শেখার চেষ্টা করবে। আমাদের দোকানেও ভিন্ন একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে।”
রুহিয়া থানা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ বলেন, আমার কাছে এটাকে শুধু গণিত শেখানো মনে হচ্ছে না, আমি মনে করি, গ্রামীণ পরিবেশে শিক্ষার প্রবাহ তৈরি করার এক সৃজনশীল প্রয়াস। সঙ্গে অনলাইন জুয়া খেলা ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে বড় ভুমিকা রাখতে পারে সদর উপজেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যেই এ উদ্যোগ প্রশংসিত হচ্ছে, এবং অনেকে এমন উদ্যোগ অন্যান্য জেলাতেও শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শিক্ষা যদি হয় সর্বজনীন, তবে তার মাধ্যমও হতে পারে ব্যতিক্রমী। ঠাকুরগাঁওয়ের এই “অঙ্কের আড্ডা” হয়তো একদিন হয়ে উঠবে সারাদেশে অনুসরণযোগ্য একটি মডেল।
নোভা