ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হয়ে উঠেছে নেটওয়ার্কিং, অর্থাৎ পেশাগত যোগাযোগ। শুধুমাত্র একটি ভালো সিভি কিংবা অভিজ্ঞতা আর যথেষ্ট নয়—চাকরি পেতে হলে এখন চাই বাস্তব যোগাযোগ এবং আন্তরিক সম্পর্ক।
করোনা-পরবর্তী সময়ের তুলনায় বর্তমানে কর্মীদের হাতে নিয়োগকারীদের ওপর আগের মতো প্রভাব নেই। সেই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-এর অগ্রযাত্রা অনেক চাকরিকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। এ অবস্থায় নিয়োগদাতারা এখন বেশি বেছে নিচ্ছেন, ফলে শুধুমাত্র দক্ষতা নয়, দরকার হয়ে পড়েছে কে আপনাকে রেফার করছে এবং আপনি কতটা দৃশ্যমান।
বিজনেস নেটওয়ার্কিং গ্রুপ BNI-এর প্রতিষ্ঠাতা আইভান মিসনার বলেন, “নেটওয়ার্কিং শিকারের মতো নয়, বরং এটা চাষাবাদের মতো—সম্পর্ক গড়ে তোলার একটি প্রক্রিয়া।” তিনি পরামর্শ দেন, চাকরি হারানোর আগেই সবাইকে নিজেদের নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে।
কর্পোরেট যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং কলম্বিয়া বিজনেস স্কুলের প্রশিক্ষক ডরি ক্লার্ক বলেন, আমরা অনেক সময়েই চাকরি পেয়ে যাই কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধুর পরিচিত একজনের মাধ্যমে। একে বলা হয় favor economy—যেখানে আপনি কাউকে সাহায্য করেন শুধুমাত্র এই কারণে যে তিনি আপনার পরিচিত কারও পরিচিত।
ডরি বলেন, “যখন নিয়োগ কম, তখন আপনাকে এগিয়ে নিতে পারে এমন একমাত্র উপায় হলো এমন কাউকে পাশে পাওয়া, যিনি আপনার জন্য রাজনৈতিক পুঁজি ব্যয় করতে রাজি।” আর এই সম্পর্ক গড়ে ওঠে ধীরে ধীরে, একটানা যত্নের মাধ্যমে।
ডরি ক্লার্কের মতে, শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট লাইক করা আপনাকে বাস্তব নেটওয়ার্কিংয়ের ছায়ামাত্রই দেবে, বাস্তব সম্পর্ক নয়। এর চেয়ে মাঝেমধ্যে কাউকে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ মেসেজ পাঠানো, কোনো দরকার ছাড়াই যোগাযোগ করা কিংবা সময় করে দেখা করাই সবচেয়ে কার্যকর।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার পরামর্শদাতা গোরিক এনজি বলেন, “আপনার সিভি হয়তো অসাধারণ, কিন্তু তা শুধু একটা Word ফাইল। যখন আপনি অফিসের করিডোরে এসে বলেন—‘আমার এক ভাইয়ের মেয়ে চাকরি খুঁজছে, একটু দেখবেন?’—তখনই আপনি এগিয়ে যান।”
তিনি আরও বলেন, “নিয়োগকর্তা কখনোই এমন কাউকে চাকরি দিতে চান না, যিনি কাগজে-কলমে ভালো কিন্তু বাস্তবে তেমন নন।”
মুমু
