ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

টেক্সাসে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা: শেষ মুহূর্তে ব্যর্থ রিপাবলিকানদের ‘কঠোর’ উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০২:২৯, ৬ জুন ২০২৫; আপডেট: ০২:৩০, ৬ জুন ২০২৫

টেক্সাসে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা: শেষ মুহূর্তে ব্যর্থ রিপাবলিকানদের ‘কঠোর’ উদ্যোগ

ছবি: প্রতীকী

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে শিশু-কিশোরদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি বড় ধরনের উদ্যোগ শেষ মুহূর্তে ব্যর্থ হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনটি ১৮ বছরের কম বয়সীদের টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিল।

রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত স্টেট হাউজে বিলটি পাস করলেও, স্টেট সিনেটে তা ভোটাভুটির পর্যায়ে পৌঁছানোর আগেই সময় ফুরিয়ে যায়। ফলে কার্যত বিলটি বাতিল হয়ে যায়।

প্রস্তাবিত আইনটি পাশ হলে এটি হতো যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম কঠোর শিশু সুরক্ষা আইন। এমনকি এটি ফ্লোরিডার ১৪ বছরের কম বয়সীদের সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞাকেও ছাড়িয়ে যেত। অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যেই ১৬ বছরের নিচে কারও জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে।

বিলের প্রস্তাবক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা জ্যারেড প্যাটারসন বলেন, ‘এই অধিবেশনে এমন আর কোনো বিল ছিল না যা এত বিস্তৃতভাবে শিশুদের সুরক্ষা দিতে পারত।’ তিনি এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে অভিযোগ করেন, ‘অজ্ঞাতনামা কিছু বিলিয়নিয়ারের চাপেই এই উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত থেমে গেছে।’

সিনেট ভোটে বিলটি পাস হবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না রাজ্যের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক। সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে তিনি জানান, পর্যাপ্ত সমর্থন না থাকায় বিলটি আর তোলা হয়নি।

তবে টেক্সাস গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট সোশ্যাল মিডিয়ায় শিশু ব্যবহারে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা না দিলেও এই সপ্তাহেই একটি আইন অনুমোদন করেছেন, যেখানে অ্যাপ স্টোর ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই এবং ১৮ বছরের নিচে অ্যাপ ডাউনলোডের ক্ষেত্রে অভিভাবক সম্মতির বিধান রাখা হয়েছে।

জাতীয় পর্যায়ে বিতর্ক: শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বনাম বাক-স্বাধীনতা

বিলটির বিরোধিতায় সোচ্চার ছিল প্রযুক্তি শিল্পের বড় বড় সংস্থাগুলো, যারা একে ‘বাক-স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ’ বলে দাবি করেছে।

তবে সমালোচকরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে শিশু-কিশোরদের আকৃষ্ট করতে আসক্তিমূলক ফিচার ব্যবহার করছে, এবং সহিংস বা বয়স-অনুপযুক্ত কনটেন্ট ঠেকাতে যথেষ্ট কিছু করছে না।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় অর্ধেক মার্কিন কিশোর প্রতিনিয়ত অনলাইনে থাকে, যদিও তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে এর প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে।

আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-ও এক বিবৃতিতে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় আইন প্রণয়ন ও প্রযুক্তি কোম্পানির দায়িত্ব পালনের ওপর জোর দিয়েছে।

ইতিমধ্যে ইউটাহ রাজ্যে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই এবং নাবালক অ্যাকাউন্টে নিয়ন্ত্রণ আরোপের আইন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম চালু হলেও, সেটি ২০২৪ সালে একটি ফেডারেল আদালত সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।

 

সূত্র: এপি।

রাকিব

×