
সংগৃহীত
অনেক মা ও পরিবার স্বাভাবিক প্রসব (Normal Labour) নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকেন—বিশেষ করে যখন প্রসব দীর্ঘ সময় ধরে চলে। প্রথম সন্তান হলে অনেক সময় ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে। অথচ এই দীর্ঘ সময় নিয়ে নানা গুজব ও ভীতি ছড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং এতে ভয়ের কিছু নেই।
স্বাভাবিক প্রসব মূলত তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়-প্রথম ধাপে গর্ভমুখ (সার্ভিক্স) প্রসারিত হয় ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত, যা অনেক সময় নিয়ে থাকে। এই ধাপটি আবার ল্যাটেন্ট ও অ্যাকটিভ দুই পর্যায়ে বিভক্ত, যেখানে শুরুতে ধীরে ধীরে এবং পরে দ্রুত গর্ভমুখ খুলতে থাকে। দ্বিতীয় ধাপে শিশুকে নিচে নামানোর জন্য মাকে ‘পুশ’ করতে হয় এবং তৃতীয় ধাপে প্লাসেন্টা (অম্লজাত গর্ভফুল) বের হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমবার মা হলে জরায়ু ও জন্ম নালির পেশিগুলো এই অবস্থায় প্রথমবার কাজ করে, তাই স্বাভাবিকভাবেই সময় বেশি লাগে। শিশুর অবস্থান যদি সঠিক না হয়, যেমন -মাথা নিচে না থাকা বা মুখ সামনে থাকলে, তাও প্রসব বিলম্বিত করতে পারে। এছাড়া পেলভিক হাড় সরু হলে বা জরায়ুর সংকোচন দুর্বল হলে প্রসব দীর্ঘায়িত হয়।
এদিকে মানসিক অবস্থা, যেমন ভয়, দুশ্চিন্তা কিংবা নিরাপত্তার অভাব থেকেও লেবার দীর্ঘ হতে পারে। এতে জরায়ুর সংকোচনকারী হরমোন (অক্সিটোসিন) নিঃসরণ কমে যায়, ফলে স্বাভাবিক প্রসব বিলম্বিত হয়।
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘ প্রসবকাল মানেই জটিলতা নয়। বরং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও সঠিক গাইডলাইনের মাধ্যমে এমন দীর্ঘ প্রসবও নিরাপদভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।
প্রসবকালীন এ ধরনের পরিস্থিতিতে ধৈর্য ও মনোবল ধরে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি, সন্তান জন্মের প্রাক্কালে ভয় না পেয়ে, চিকিৎসকের পরামর্শে ধাপে ধাপে প্রসব এগিয়ে নিতে পরিবার ও স্বজনদের সহযোগিতাও জরুরি।
হ্যাপী