
ছবিঃ সংগৃহীত
অনেকেই জানেন না ‘সাইলেন্ট ক্যান্সার’ আসলে কী। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সার রয়েছে, যেটি নিঃশব্দে শরীরে বেড়ে ওঠে এবং অনেক সময় ভুল উপসর্গের কারণে একে ‘গ্যাস’ বা হজমের সমস্যাভেবে অবহেলা করা হয়। এই ক্যান্সারটি হলো ওভারি ক্যান্সার বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার, যাকে সাইলেন্ট ক্যান্সার বলা হয়ে থাকে।
ওভারি ক্যান্সার নারীদের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পঞ্চম বা ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। এটি এমন এক ধরনের ক্যান্সার যার প্রাথমিক উপসর্গ খুবই অস্পষ্ট। যেমন—
-
পেটে ভারী লাগা
-
অল্প খেয়েই পেট ভরে যাওয়ার অনুভূতি
-
পেট ফুলে যাওয়া বা গ্যাস হওয়া
-
ঘন ঘন মলত্যাগের চাপ
-
তলপেটে ব্যথা
-
দীর্ঘস্থায়ী কাশি ও শ্বাসকষ্ট
এই লক্ষণগুলো অনেকেই সাধারণ গ্যাসের সমস্যা মনে করে থাকেন, কিন্তু যদি এই উপসর্গগুলো মাসে ১২ দিনের বেশি স্থায়ী হয়, তবে দ্রুত একজন গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এক্ষেত্রে আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা এবং রক্তের কিছু নির্দিষ্ট টেস্ট যেমন CA-125 ও CEA করে বোঝা যায় টিউমার রয়েছে কিনা। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় ওভারি ক্যান্সারের কারণে প্রথমেই ফুসফুসে পানি জমে, এবং কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তাই এই ক্যান্সারটি একদম নিঃশব্দে শরীরে ছড়িয়ে পড়ায় একে বলা হয় ‘সাইলেন্ট ক্যান্সার’।
চিকিৎসার প্রথম ধাপ হলো স্ক্যান করে বোঝা রোগটি শুধুমাত্র একটি স্থানে রয়েছে না ছড়িয়ে পড়েছে। এক জায়গায় থাকলে বায়োপসি করে নিশ্চিত হওয়া হয়। তবে বায়োপসি করার সময় সতর্ক থাকতে হয়, যেন সার্জিক্যাল প্লেন নষ্ট না হয়। কারণ এতে ক্যান্সার কোষ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
যদি ক্যান্সার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে, তখন সাধারণত কেমোথেরাপি দিয়ে শুরু করা হয় এবং পরে সার্জারি করা হয়। জানা গেছে, ওভারি ক্যান্সারের প্রায় ১০ শতাংশ ক্ষেত্রেই এটি বংশানুক্রমিক হয়ে থাকে। এজন্য জেনেটিক টেস্ট করানো জরুরি।
যদি দেখা যায় ক্যান্সার বংশানুক্রমিক, তবে নির্দিষ্ট ট্যাবলেট ও টার্গেটেড থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়, যাতে রোগী দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে পারেন।
তাই যেকোনো নারী যদি নিয়মিতভাবে উপরের লক্ষণগুলো অনুভব করেন, বিশেষ করে মাসে ১২ দিনের বেশি সময় ধরে, তাহলে তা অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ইমরান