ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯

monarchmart
monarchmart

ফেসিয়াল পালসি

ডা. হারাধন দেবনাথ

প্রকাশিত: ০০:৩৮, ১৪ মার্চ ২০২৩

ফেসিয়াল পালসি

সাধারণত নার্ভ ড্যামেজের কারণে মুখের নড়াচড়া করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়

সাধারণত নার্ভ ড্যামেজের কারণে মুখের নড়াচড়া করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়াকে ফেসিয়াল নার্ভ প্যারালাইসিস বলা হয়। 
এটা এক ধরনের প্যারালাইসিস, আমাদের ৭ম ক্রেনিয়াল নার্ভটিকে ফেসিয়াল নার্ভ বলে, যখন এটি আংশিক বা সম্পূর্ণ প্যারালাইজড হয়ে যায়, তখন তাকে ফেসিয়াল প্যারালাইসিস বা পালসি বলা হয়।
জন বেল নামের এক ভদ্রলোক এই রোগটি প্রথম আবিষ্কার করেন, সেজন্য একে বেলস পালসিও বলা হয়।
এটি যে কোনো বয়সের মহিলা ও পুরুষ উভয়েরই হতে পারে, তবে পুরুষের তুলনায় মহিলাদের এই রোগটি বেশি দেখা যায়। ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি হওয়ার কারণ-
বেলস পালসি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
১. ভাইরাস ইনফেকশন
২. মধ্যকর্ণে ইনফেকশন
৩. ঠান্ডাজনিত কারণে
৪. আঘাতজনিত কারণ 
৫. মস্তিষ্কের স্ট্রোকজনিত কারণ
৬. ফেসিয়াল টিউমার 
৭. কানের অপারেশন পরবর্তী ফেসিয়াল নার্ভ ইনজুরি ইত্যাদি ।
ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসির লক্ষণ-
১. আক্রান্ত রোগীর মুখ একদিকে বাঁকা হয়ে যায় ।
২. আক্রান্ত পাশের চোখ বন্ধ হয় না ও চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
৩. কুলি করতে গেলে অন্য পাশে চলে যায়।
৪. খাবার গিলতে কষ্ট হয় ।
৫. কপাল ভাঁজ করতে পারে না ।
৬. অনেক সময় কথা বলতে কষ্ট হয় ।
ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি নির্ণয়-
এটি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ও রোগীর ইতিহাস জেনে রোগ নির্ণয় করতে পারেন, তবে অনেক সময় কিছু প্যাথলজিক্যাল ও রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষা করার প্রয়োজন পড়ে । যেমন:
১. কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট উইথ ইএসআর
২. এক্স-রে অব টিএম (টেম্পরো- মেন্ডিবুলার) জয়েন্ট।
৩. নার্ভ কন্ডাকশন ভেলসিটি (এনসিভি) অব ফেসিয়াল নার্ভ ইত্যাদি।
ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসির 
চিকিৎসা-
এই রোগের চিকিৎসা কারণের ওপর নির্ভর করে। 
ফেসিয়াল পালসির চিকিৎসার জন্য কর্টিকোস্টেরয়েড হলো সব থেকে ভালো ওষুধ। দেখা গেছে যে, এই ওষুধ ৬ মাস সময়ের ওপর পর্যন্ত আরাম দিয়ে থাকে। তবে, এই অবস্থার জন্য প্রাথমিক পর্যায় থেকেই স্টেরোয়েড দিয়ে চিকিৎসা করা গুরুত্বপূর্ণ। 
যদি সন্দেহ করা হয় যে, কোনো ভাইরাস এই রোগের কারণ, তাহলে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া হয়। 
ওষুধের পাশাপাশি, ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে পেশির ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়। 
মারাত্মক ক্ষেত্রে যেখানে ট্রমার কারণে স্নায়ু সঙ্কুচিত হয়ে যায় বা আক্রান্ত হয়, সেক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। এই অবস্থা কয়েক মাসের মধ্যেই কমে যেতে পারে এবং এটি আবার হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। শুরুতেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভালো থাকা যায়। 

লেখক : নিউরোসার্জারি বিভাগ,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।
চেম্বার : ল্যাবএইড হসপিটাল, 
(দ্বিতীয় তলা) ধানম-ি, ঢাকা। শুক্রবার ছুটি। 
০১৭১১-৩৫-৪১-২০, হটলাইন : ১০৬০৬

monarchmart
monarchmart