ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৬ মে ২০২৫, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঘাড় ও গলায় কালো দাগে সৌন্দর্যহানি

ডা. মো. জাহেদ পারভেজ 

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ঘাড় ও গলায় কালো দাগে সৌন্দর্যহানি

পুরুষ ও মহিলাদের অনেকেরই গলায় ও  ঘাড়ে কালো দাগ হয়

পুরুষ ও মহিলাদের অনেকেরই গলায় ও  ঘাড়ে কালো দাগ হয় এতে বিব্রত বোধ ও করতে হয়। গলা ও ঘাড় কালো হওয়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে অ্যাকানথোসিস নিগ্রিকানস। এই দাগকে অনেকেই ময়লা জমেছে ভেবে ভুল করেন। ময়লা পরিষ্কারের জন্য সাবান দিয়ে গলা ও ঘাড়ে স্ক্রাব করেন।  অথিরিক্ত স্কাবিংয়ের কারণে ত্বক সংবেদনশীল হয়ে  পড়ে এবং ত্বকের আর্দ্রতা কমে। এ কারণে দাগ আরও গাঢ় হয়ে যায়। আসলে গলা ও ঘাড় অনেকগুলো রোগের কারণে কালো হতে পারে। এছাড়া তীব্র সূর্যালোক এবং দূষণও অনেকটা দায়ী।
কেন হয় দাগ : শুধু গলা ও ঘাড়ের ত্বকই কালো হয়ে যায় না, এটি ত্বকের পুরুত্ব বাড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে ত্বকে ভাঁজ এবং চুলকানির সৃষ্টি হয়। অনেক সময় ত্বক জ্বলতে থাকে । কখনো কখনো ঘামের দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। চল্লিশোর্ধ  মহিলাদের মধ্যে ৮০ ভাগই এই সমস্যায় ভুগতে পারেন। এটি মূলত ওজনাধিক্য কারণেই হয়। পুরুষ থেকে মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। জেনেটিক্যাল কারণেও এই সমস্যা হতে পারে। ডায়াবেটিস এবং ওজনাধিক্য, রক্তচাপ, পিসিওএস এবং হাইপারথাইরয়েডিজম থাকলে অ্যাকানথোসিস নিগ্রিকানের প্রবণতা বেশি।  প্রখর রোদ গলা এবং ঘাড়ে পরলেও সানবার্ন হয়ে গলা ও ঘাড়, বোগলে, গোপন স্থানে কালো হয়। বিভিন্ন মেটালিক মোটা চেইন পরার কারণেও গলা ও ঘাড়ের ত্বক কালো হতে পারে।

এছাড়া নিম্নমানের ট্যালকম পাউডার, ডিওডোরেন্টস ও পারফিউম স্প্রে, লোশন ও স্টেরয়েডযুক্ত ক্রিমের কারণেও গলা ও ঘাড়ের ত্বক কালো হওয়ার একটি বড় কারণ। আবার চুলে রং করার সময় রংয়ের যে রাসায়নিক উপাদান থাকে তা গলা ও ঘাড়ে লেগে গেলে ত্বক জ্বালা করে । তারপরে ধীরে ধীরে, গলা ও ঘাড়ে কালো দাগ হতে শুরু করে। 
প্রতিকার কিভাবে : ওজনাধিক্যের কারণে যদি গলা ও ঘাড়ে দাগ হয়ে থাকে তবে ডায়েট এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমাতে হবে। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ এবং থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে সঠিকভাবে চিকিৎসা করা দরকার। ঘাড়ের কালো দাগ দূর করতে বেশকিছু ওষুধ রয়েছে। প্রতিদিন সকালে গলা ও ঘাড় পানি দিয়ে ধুয়ে বেনজাইল পেরোক্সাইড (৪%) অথবা স্যাসলিক ফোম (২%) ব্যবহার করতে পারেন। 
তারপরে ময়েশ্চারাইজার হিসাবে নারিকেল তেল ব্যবহার করা যাবে। প্রয়োজনে নারিকেল তেলের সঙ্গে ভিটামিন ই-ক্যাপসুল মিশিয়ে নিতে পারেন। প্রতি রাতে রেটিনো এ ক্রিম ০.০২৫% ব্যবহার করা যায়। রেটিনো এ ০.০৫%, বা অ্যাডাপালিন জেল ০.১%, বা তাজারোটিন জেলের যে কোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন। এই ক্রিম বা জেল ব্যবহারের সুবিধা পেতে অন্তত ৩ মাস নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে করা উচিত। 
আর তীব্র রোদে যাওয়ার সময় বন্ধ গলার শার্ট, কুর্তা বা কামিজ পরেন, তাহলে আপনার ঘাড়ের ত্বক রোদে পোড়া থেকে রক্ষা পাবে। নিয়মিত ঘাড়-গলা, নিতম্ব বিশেষভাবে পরিষ্কার করা। 
বিশেষ করে ঘাড় বা গলার ত্বক কালো হয়ে যাওয়া বা কালচে ছোপ পড়ার সঙ্গে যদি চুলকানির সমস্যা হয়, তাহলে অবশ্যই ত্বক ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এটি ত্বকের কোনো ধরনের সংক্রমণের কারণে হতে পারে। তা চিকিৎসক পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

লেখক : (সহকারী অধ্যাপক) ত্বক, চর্ম যৌন ও হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগ)  শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল। 
চেম্বার : ডা. জাহেদস এন্ড হেয়ার  স্কিনিক হাসপাতাল। সাবামু টাউয়ার, লিফটের -৫, গ্রীন রোড, পান্থপথ মোড়, পুলিশ বক্সের পাশে ঢাকা। 
০১৫৬৭-৮৪-৫৪-১৯
০১৭৩০-৭১-৬০-৬০ 

×