ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মেরুদণ্ডের সমস্যা কেন হয় ও তার প্রতিকার

প্রকাশিত: ০১:১৩, ২৭ এপ্রিল ২০২১

মেরুদণ্ডের সমস্যা কেন হয় ও তার প্রতিকার

পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে যেমন শিরদাঁড়ার সমস্যা হতে পারে, তেমনই অতিরিক্ত বিশ্রাম, আলস্যের ফলেও মেরুদ-ের সমস্যা হতে পারে। ঘুমানোর সময় অনেকেই অদ্ভুত ভঙ্গিতে শুয়ে থাকেন। অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে পিঠ, কোমর বাঁকিয়ে শোয়ার অভ্যাসে মেরুদণ্ডের ক্ষতি করে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দেহে ২০৬টি হাড়, ও ৩৬০টি জোড়া এবং প্রায় ৮০০ এর মতো মাংসপেশী রয়েছে। মেরুদ- ছোট-বড় ৩৩টি হাড়ের সমন্বয়ে তৈরি। এই হাড়, জোড়া ও মাংসপেশীসমূহ একত্রিতভাবে মানবদেহের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে সহযোগিতা করে। একজন মানুষকে বিভিন্ন রকম মুভমেন্টের মধ্যে থাকতে হয়। এই মুভমেন্ট হয়ে থাকে ব্রেনের মাধ্যমে স্পাইনাল কর্ডের সহযোগিতায়। নিজেদের কিছু অভ্যাসের কারণে মেরুদন্ডের ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেমন- *সারাদিন এক জায়গায় বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করলে শিরদাঁড়া বা মেরুদন্ডের সমস্যা হতে পারে। * যদি দীর্ঘদিন, নিয়মিত মাত্রাতিরিক্ত কাজের চাপে পর্যাপ্ত বিশ্রাম না হয়। সে ক্ষেত্রে মেরুদ-ের সমস্যা হতে পারে। * খুব ভারি ব্যাগ নিয়মিত পিঠে নিলে কাঁধে আর পিঠে অতিরিক্ত চাপ পড়ে মেরুদ-ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। * পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে যেমন শিরদাঁড়ার সমস্যা হতে পারে, তেমনই অতিরিক্ত বিশ্রাম, আলস্যের ফলেও মেরুদ-ের সমস্যা হতে পারে। * ঘুমানোর সময় অনেকেই অদ্ভুত ভঙ্গিতে শুয়ে থাকেন। অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে পিঠ, কোমর বাঁকিয়ে শোয়ার অভ্যাসে মেরুদ-ের ক্ষতি করে। * নিয়মিত হাই হিল পরার অভ্যাস বা শক্ত জুতা পরার অভ্যাস মেরুদ-ে অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি করে। এর থেকে পরবর্তীকালে মেরুদ-ে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। * দীর্ঘক্ষণ ঝুঁকে বসে মোবাইলে চ্যাট বা ল্যাপটপে ব্যস্ত থাকলে মেরুদ-ে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। পরবর্তী সময়ে মেরুদ-ে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। * দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি বা বাইকে ড্রাইভ করলে মেরুদ-ের সমস্যা হতে পারে। * খুব শক্ত, অসমান বিছানায় দীর্ঘদিন ধরে শুলে মেরুদ-ের সমস্যা হতে পারে। এবার চিকিৎসা : প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে অপারেশনের মাধ্যমে স্নায়ু বা স্নায়ু রজ্জুর চাপকে প্রশমিত করা হয়। এ ছাড়া নিয়মিত ফিজিওথেরাপি গ্রহণের মাধ্যমে ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এ ছাড়া পারকিউটেনিয়াস লেজার ডিস্ক ডিকম্প্রেশনের (পিএলডিডি) মাধ্যমে নির্দিষ্ট মাত্রার ও নির্দিষ্ট ধরনের লেজার রশ্মি প্রয়োগ করে চাপ কমানো সম্ভব। এতে স্থানচ্যুত (প্রোল্যাপসড) ডিস্ক পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে এবং স্পাইনাল কর্ড ও নার্ভরুটের ওপর থেকে চাপ কমে রোগী সুস্থ হতে পারে। এ ছাড়া লেজারের অপটোথারমো মেকানিক্যাল স্টিমুলেশনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত নার্ভ ঠিক করা সম্ভব। লেজার চিকিৎসায় কাটাছেড়া ও রোগীকে অজ্ঞান করার প্রয়োজন হয় না। ফলে ডায়াবেটিস বা হৃদরোগীর ক্ষেত্রেও তেমন কোন সমস্যা হয় না। উন্নত বিশ্বে ডিস্ক প্রোল্যাপসের বেশিরভাগ রোগীরই এখন আর কেটে অপারেশন করা হয় না। এই চিকিৎসায় যে ধরনের বা যে মাত্রার লেজার রশ্মি ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তাতে কোন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা নেই। দেশেও ঘাড় ও কোমর ব্যথাসহ মেরুদ-ের চিকিৎসায় লেজার পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। তবে এসব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ফিজিউথ্যারাপি মতামতের ভিওিতে চিকিৎসসা নেয়া উচিত। ডাঃ মোঃ আবু সালেহ আলমগীর অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান বাংলাদেশ পেইন, ফিজিওথেরাপি এ্যান্ড রি-হ্যাবিলিটেশন সেন্টার, ২৬৯/৬, ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ বিল্ডিং মালিবাগ মোড়, ঢাকা ০১৮২৭-৩০৫৭৩৮ ০১৭৩৪-৩৯৪৩০৯
×