ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কেন অনেক দেশ বাংলাদেশিদের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ করেছে!

প্রকাশিত: ১০:২৫, ১৮ মে ২০২৫

কেন অনেক দেশ বাংলাদেশিদের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ করেছে!

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে বিদেশে গিয়ে আর না ফেরার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় একের পর এক দেশ ভিসা দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। সর্বশেষ, ভিয়েতনাম কোনো ধরনের পূর্ব আলোচনা ছাড়াই ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ধরণের হঠাৎ সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রকৃত পর্যটকরা।

 

 

বিশেষজ্ঞ ও ট্যুর অপারেটরদের মতে, অনিয়ম বন্ধে দরকার সমন্বিত উদ্যোগ এবং সরকারের সক্রিয় ভূমিকা। এক্ষেত্রে হুট করে ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়, বরং আলোচনা ও সমাধানের পথে হাঁটতে হবে।

 


বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কর্মরত জুনায়েদ নামে একজন নিয়মিত পর্যটক জানান, বর্তমানে ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

"এখন এম্বাসিকে বোঝাতে হয় যে আমি সত্যিকারের ভ্রমণকারী। ভিডিও কলে অফিস দেখাতে হয়, বিভিন্ন কাগজপত্র দিতে হয়," বলেন তিনি।

 


গত কয়েক বছরে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সীমিত বা বন্ধ করেছে যেসব দেশ, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

* তুরস্ক
* সংযুক্ত আরব আমিরাত
* সিঙ্গাপুর
* কম্বোডিয়া
* মধ্য এশিয়ার একাধিক দেশ
* সর্বশেষ সংযোজন: ভিয়েতনাম

 


পর্যটনের নামে আদম পাচার ও ‘ওভার স্টে’ (ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দেশে না ফেরা) এই সমস্যার মূল কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আটাবের সাধারণ সম্পাদক আফসিয়া জান্নাত সালেহ বলেন: “অসৎ উদ্দেশ্যে ট্যুরিজমের নামে লোক পাঠানো হচ্ছে। তারা আর ফিরে আসছে না। এতে করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং প্রকৃত ভ্রমণকারীরা সমস্যায় পড়ছেন।”

 

 

টোয়াব পরিচালক তাসনিম আমিন শোভন বলেন: “যখন কেউ ওভার স্টে করে, তখন সেই দেশের সরকার বাধ্য হয় আমাদের নাগরিকদের ভিসা না দিতে।”

 


রামরু (রেফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট) এর নির্বাহী পরিচালক সি আর আবরার বলেন, “যাদেরকে বিদেশে আটকানো বা ফেরত পাঠানো হচ্ছে, সেখান থেকেই ফলোআপ করা উচিত। কারা পাঠিয়েছে, কীভাবে পাঠিয়েছে,  এটা বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।”

তিনি আরও বলেন, গবেষকদের সঙ্গে সরকারের একটি কার্যকর যোগাযোগ থাকা প্রয়োজন, যাতে এই পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করে উপযুক্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা যায়।

 


এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আরও অনেক দেশ বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য ভিসা কঠোর বা বন্ধ করে দিতে পারে। তাই অনিয়ম বন্ধে সরকার, ট্যুর অপারেটর, এবং সচেতন নাগরিকদের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া বিকল্প নেই।

আঁখি

×