ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারতের নিষেধাজ্ঞায় উদ্বিগ্ন আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা, পণ্য রপ্তানিতে নতুন অনিশ্চয়তা

মো: সাইফুল ইসলাম, আখাউড়া

প্রকাশিত: ১৫:৪২, ১৮ মে ২০২৫; আপডেট: ১৫:৪২, ১৮ মে ২০২৫

ভারতের নিষেধাজ্ঞায় উদ্বিগ্ন আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা, পণ্য রপ্তানিতে নতুন অনিশ্চয়তা

ছবি: জনকণ্ঠ

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশে স্থলবাণিজ্যে হঠাৎ করে জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞায় চরম উদ্বেগে আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা। ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) গত শনিবার যে আদেশে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকসহ সাত ধরনের পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তার সরাসরি প্রভাব পড়ছে আখাউড়া স্থলবন্দরে। 

আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিনই কম-বেশি পণ্য রপ্তানি করতেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য ও বিভিন্ন প্লাস্টিক সামগ্রী, তুলা, কাঠের ফার্নিচার, রপ্তানিতে এই বন্দরের উপর নির্ভরতা ছিল প্রবল। এখন সেই পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা।

আখাউড়া স্থলবন্দরের রপ্তানিকারক জে আর ট্রেডিং এর স্বত্বাধিকারী মো: আবু সুফিয়ান জানান, গত শনিবার চারটি গাড়ি করে সতের হাজার ডলারের প্লাস্টিক সামগ্রী ভারতের আগরতলায় রপ্তানি হয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বছরে প্রায় এক কোটি ডলারের কাঠের ফার্নিচার ও প্লাস্টিক সামগ্রী ভারতের আগরতলায় রপ্তানি করে থাকে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতের সাথে ব্যবসা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেল।

এই স্থল বন্দরের রপ্তানিকারক দ্বীপা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নাসির উদ্দিন জানান, আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে বছরে প্রায় ১৫ লাখ ডলারের তুলা রপ্তানি হত। নিষেধাজ্ঞার ফলে এ পণ্যটির রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেল। 

আখাউড়া স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ অর্থ বছরের গত ১১ মাসে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৪৫৩ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ভারতের এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রপ্তানি কমে আসবে। 

আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মাহমুদুল হাসান জানান, ভারতরের নিষিদ্ধের ফলে রপ্তানি কমে গেছে। আগে এই স্থলবন্দর দিয়ে ২০-৩০টি পণ্যবাহী গাড়ি ভারতের আগরতলায় রপ্তানি হত। বর্তমানে তা কমে গেছে। ভারতের আমদানি নিষিদ্ধ পণ্যগুলো এই বন্দর দিয়ে বেশি রপ্তানি হত। ফলে এই স্থলবন্দরের মাশুল আদায় কমে গেছে। 

ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, দীর্ঘদিন এই নিষেধাজ্ঞা চলতে থাকলে আখাউড়ায় স্থলবন্দরের কার্যক্রম ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে পড়বে। ফলে স্থানীয় শ্রমজীবী ও পরিবহন খাতের শত শত মানুষের জীবিকাও হুমকির মুখে পড়বে। ভারতের এই ধরনের সিদ্ধান্তে দেশটির পূর্বাঞ্চলে বাংলাদেশের পণ্যের জন্য প্রাকৃতিক ও গুরুত্বপূর্ণ বাজারে প্রবেশাধিকার সীমিত করা এই অঞ্চলের সীমান্তবর্তী বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল ব্যবসাগুলোর দক্ষতা ও প্রতিযোগিতা ক্ষুন্ন করবে।

এএইচএ

×