
ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভারসহ সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা৷ এতে করে জনসাধারণের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বিগ্ন আর আতঙ্ক৷
জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে উপজেলার পৌরসভার সবর্ত্রই মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে৷ এদিকে পৌরসভার পক্ষ থেকে নিয়মিত মশার ঔষধ না ছিটানোর কারণে এডিস মশার বিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানায়৷
৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সালাউদ্দিন বলেন, "দোনারচর, সবজিকান্দি গ্রামে শতকরা ১০০ জনের মধ্যে ৭০ জনই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী, যা দিন দিন বেড়েই চলছে৷ গত ৫ আগস্টের পর নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের সকল পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরদের সরকারি পরিপত্র জারি করে বাতিল করে দেয়৷র ফলে কাউন্সিলরের পদ শূন্য হওয়ায় প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয় জনগণ৷"
তিনি আরো বলেন, "আমার ওয়ার্ডে ঘনবসতি হওয়ার পৌরসভার কর্মকর্তাদের বারবার মশার ঔষধ ছিটানো অনুরোধ করা হলেও তারা কোন কর্ণপাত না করায় দোনারচর, সবজিকান্দি, সাহাপাড়াসহ ৯ ওয়ার্ডের বেশিরভাগ এলাকায় দিনদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলায় পরিবারগুলোকে নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন আর আতঙ্কে থাকতে হয়৷"
সাবেক ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন খন্দকার সুমন বলেন, "৫নং ওয়ার্ডের সাহাপাড়াসহ বাকি ৭টি ওয়ার্ডেই প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে৷ দেশের সবগুলো পৌরসভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি না থাকায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে৷" তিনি আরো বলেন, "পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় কাউন্সিলরের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের এডিস মশা বিস্তার বৃদ্ধি ব্যাপারে আমি কয়েকবার অবহিত করার ফলেও তারা এই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে ঔষধ ছিটানোর কোন ব্যবস্থা নেয়নি, নিলেও আবার সীমিত৷ যার দরুন আজ এই ভয়াবহতায় পড়তে হচ্ছে৷"
দাউদকান্দি সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার হাবিবুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু চিকিৎসায় আমাদের সরকারি গাইডলাইন অনুযায়ী সবরকম প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশার কামড় থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার আহবান জানান সবাইকে। সকাল, ভোর ও সন্ধ্যায় এডিস মশা বেশি কামড়ায় বলে তিনি এ সময়ে সবাইকে বাড়তি সচেতন থাকার কথা বলেন। এছাড়াও তিনি গায়ে জ্বর অনুভব করলে দ্রত ডেঙ্গু পরীক্ষা করানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন। ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহারে জোর দেন তিনি।
পৌর প্রশাসক ও দাউদকান্দি সহকারি কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম বলেন, "আমি শুনেছি পৌরসভার ৫ নং ও ৬ ওয়ার্ডে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা উদ্বেগজনক। তবে আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মশক নিধন কর্মসূচির আওতায় মশার ওষুধ স্প্রের মাধ্যমে প্রয়োগ করেছি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। সেই সঙ্গে পৌরবাসির প্রতি অনুরোধ থাকবে আপনারা যত্রতত্রে ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। নিজ নিজ বাসস্থান, আঙিনা, বারান্দা পরিস্কার রাখুন। এতে করে প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভালো হলে কিংবা জনসচেতনতা বৃদ্ধি পেলে আমরা নিরাপদ থাকতে পারব। এবং এতে মশার বংশবিস্তার রোধ হবে। কারণ এখন বর্ষাকাল পাশাপাশি বৃষ্টি হলে ময়লার পানি জমে থাকলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।"
এএইচএ