
ছবি: জনকন্ঠ
বাহারি ফুলে রঙিন রাজশাহী নগরী। মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে চারপাশে। তীব্র তাপদাহে পুড়লেও দেখা মিলছে না কাঙ্খিত বৃষ্টির। এর মধ্যে যেন প্রকৃতিতে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে নানা রঙের ফুল। এরই মাঝে নতুন চমক নীল কৃষ্ণচূড়া। রাজশাহী মহানগরীর উপশহর নিউ মার্কেট এলাকা থেকে পশ্চিমে যে পথ চলে গেছে ডা. কাইসার মেমোরিয়াল হাসপাতালের দিকে। সেই পথটা ধরে এগুলোই রাস্তা উত্তর পাশে একটু পরপর কৃষ্ণচূড়া গাছ চোখে পড়বে। পথ চলতে চলতে পথিকের চোখ যেন গাছগুলোতে ফুটে থাকা ফুলগুলোর দিকে আটকে যায়। ফুলগুলো নীল রঙের। নীল কৃষ্ণচূড়া! অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন অনেকেই। সাধারণত কৃষ্ণচূড়া ফুল লাল হিসেবেই পরিচিত সবার মাঝে। হঠাৎ নীল কৃষ্ণচূড়া চোখে পড়লে অনেকেই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন।
চলম্বা গাছের চিরল সবুজ পাতার আড়ালে শোভা ছড়াচ্ছে ফুলটি। ফুলটির আসল নাম মুলত জ্যাকারান্ডা। ইংরেজি নাম ব্লু জাকারান্ডা। জন্মস্থান ব্রাজিল। আমাদের দেশে ফুলটিকে অনেকে নীলকন্ঠ নামেও ডাকেন। ভারতবর্ষে এটি পরিচিত নীল গুলমোহর নামে। গুলমোহর মুলত কৃষ্ণচূড়ার অপর নাম। হয়তো তাই ফুলটির বাংলা নাম হয়েছে নীল কৃষ্ণচূড়া। আবার অনেকের মতে: নীল ফুলের গাছটির আকৃতি, কান্ড ও পাতা কৃষ্ণচূড়া গাছের মত হওয়ায় অনেকে ফুলটিকে নীল বা আকাশী কৃষ্ণচূড়া বলে ডাকেন।
গাছটির আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকা হলেও বর্তমানে এটি আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, পর্তুগাল ও ইতালিতে বেশ সহজলভ্য। গাছটি অপেক্ষাকৃত কম শীতের দেশগুলোতে ভালো জন্মায়।
ফুলটি অনেকটাই বিরল। পাবনাসহ দেশের কয়েক জায়গায় আছে ফুলটি। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন ও প্রিটোরিয়া শহরে অসংখ্য জ্যাকারান্ডা গাছ রয়েছে। তাই প্রিটোরিয়া, জ্যাকারান্ডার শহর নামেই পরিচিত। জলাবন্ধতা থাকলে সেখানে এই গাছ টিকিয়ে রাখা দুষ্কর। হয়তো তাই বাংলাদেশে অনেক বছর আগেই গাছটির প্রবেশ ঘটলেও তার বিস্তার ঘটেনি।
গাছটির কান্ড কৃষ্ণচূড়ার মতই হালকা ধুরস রঙের। বৈশাখের প্রথমভাগেই গাছটিতে চিকন সবুজ কারুকার্য মন্ডিত পাতা গজায়। এরপর ডালের আগায় কলি দেখা যায়। কিছুদিন পরেই কলি থেকে ফুটতে শুরু করে মাইক আকৃতির ফুলগুলো। ফুলের রং বেগুনী বা আকাশনীল । ব্রাজিলে ভেষজ চিকিৎসায় এই গাছের ব্যবহার রয়েছে। শোনা যায় এই গাছের কাঠ বেশ দামি ও সুগন্ধিযুক্ত। তবে দামের চিন্তা না করে সৌন্দের্য্যের জন্য হলেও আমাদের দেশে গাছটির বিস্তার ঘটলে মন্দ হয় না।
মুমু