ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বঙ্গভূমির জন্মরহস্য : প্যানজিয়া থেকে বৃহত্তর ব-দ্বীপ এর উত্থান

অর্ঘ্য প্রতীক চৌধুরী, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, বিইউপি

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ১০ জুন ২০২৫

বঙ্গভূমির জন্মরহস্য : প্যানজিয়া থেকে বৃহত্তর ব-দ্বীপ এর উত্থান

ছবিঃ সংগৃহীত

পদ্মা-মেঘনা-যমুনার অফুরান জলধারা, সবুজে ঘেরা উর্বর মাটি, জীবনের প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা আমাদের এই বঙ্গভূমি। কিন্তু এই ভূমির জন্মকথা কি আমরা জানি? এই ভূমি কি আদৌ ছিলো পৃথিবীর বুকে? উত্তর খুঁজতে হলে পাড়ি দিতে হবে কোটি কোটি বছর পিছনে, সাক্ষী হতে হবে পৃথিবীর বুকে মহাদেশগুলোর মহানৃত্য ও সংঘাতের এক নাটকীয় ইতিহাসের। এই বঙ্গীয় ব-দ্বীপের উৎপত্তি রহস্য উদ্ঘাটনে যেতে হবে সেই আদি মহাদেশ প্যানজিয়ার যুগ থেকে, যেখানে আমাদের এই ভূমির অস্তিত্বই ছিলো না!

আদি মহাদেশ প্যানজিয়া: 

প্রায় ২৩ কোটি বছর আগের কথা। আজকের সাতটি মহাদেশ তখন একটিমাত্র অতিকায় মহাদেশের অংশ ছিল – তার নাম প্যানজিয়া (Pangaea)। এই প্যানজিয়া ছিল এক বিশাল স্থলভাগ, চারপাশে ঘিরে ছিল এক মহাসাগর যার নাম ছিলো প্যানথালাসা। এই ধারণা কেবল তাত্ত্বিক নয়,এর পক্ষে রয়েছে অকাট্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ। 

পাজল (Puzzle) মেলানোর মতো মহাদেশ: দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূল ও আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল একে অপরের সাথে পাজলের মতে আশ্চর্যজনকভাবে খাপ খায়, ঠিক যেন পাজলের টুকরো । শুধু আকৃতিই নয়, এই সংযোগস্থলে পাওয়া যায় একই ধরনের ও বয়সের প্রাচীন শিলা ও খনিজের স্তর, যা প্রমাণ করে এরা একসময় অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল।

ফসিলের সাক্ষ্য: ভিন্ন মহাদেশে পাওয়া একই প্রজাতির স্থলচর প্রাণী ও উদ্ভিদের ফসিল। যেমন, ‘লিস্ট্রোসরাস’ নামক সরীসৃপের ফসিল পাওয়া গেছে অ্যান্টার্কটিকা, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। ‘গ্লোসোপটেরিস’ নামক প্রাচীন ফার্নের ফসিলও ছড়িয়ে আছে দক্ষিণের মহাদেশগুলোতে । এগুলো এমন প্রাণী ও উদ্ভিদ যারা কখনও বিশাল সমুদ্র পাড়ি দিতে পারতো না। তাদের বিস্তার ও সাদৃশ্যতা প্রমাণ করে মহাদেশগুলো একসাথে সংযুক্ত অবস্থায় ছিল।

মধ্যঅ্যাটলান্টিক শৈলশিরা (Mid-Atlantic Ridge): পৃথিবীর দীর্ঘতম পর্বতমালা, যা মূলত সমুদ্রতলে অবস্থিত যার মাত্র ১০% ভূমি থেকে দৃশ্যমান। এই শৈলশিরা বরাবর নতুন ভূত্বক সৃষ্টি হচ্ছে এবং মহাদেশগুলোকে ধীরে ধীরে একে অপর থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে – এই প্রক্রিয়াকে সমুদ্রতল বিস্তারণ (Seafloor Spreading) বলে। আটলান্টিক মহাসাগরের দুই পাড়ের মহাদেশগুলোর দূরত্ব বাড়ার হার এই শৈলশিরার কেন্দ্রীয় উপত্যকা থেকে শিলার বয়স ও চৌম্বকীয় ধর্ম পরীক্ষা করে সঠিকভাবেই নির্ণয় করা গেছে, যা প্যানজিয়া ভাঙনের তত্ত্বকে শক্ত ভিত্তি দেয়।

প্যানজিয়ার বিভাজন ও গন্ডোয়ানাল্যান্ডে বঙ্গের বীজ: 

প্রায় ১৮ কোটি বছর আগে, জুরাসিক যুগের শেষে ও ক্রিটেশিয়াস যুগের সূচনায়, প্যানজিয়া দুটি বড় ভাগে বিভক্ত হয়:
১.উত্তরাংশ: লরেশিয়া (Laurasia) (পরবর্তীতে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার বেশিরভাগ অংশ গঠন করে)।
২.দক্ষিণাংশ: গন্ডোয়ানাল্যান্ড (Gondwana) (পরবর্তীতে দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, মাদাগাস্কার, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও অ্যান্টার্কটিকা গঠন করে)।

আমাদের ইতিহাসের মূল সূত্রপাত এই গন্ডোয়ানাল্যান্ডেই।  ভারতীয় উপমহাদেশ, যার অংশ আজকের বাংলাদেশ, তখন গন্ডোয়ানাল্যান্ডেরই একটি অঞ্চল ছিল যা অস্ট্রেলিয়া ও অ্যান্টার্কটিকার সাথে দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত ছিলো । ভারত যখন গন্ডোয়ানাল্যান্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, সেই বিচ্ছেদের সময় সৃষ্ট ভূত্বকের ফাটল দিয়ে ব্যাপক ম্যাগমা ও লাভা নির্গত হয়েছিল। এই লাভা প্রবাহের একই ধরনের শিলাস্তর (ব্যাসাল্ট) আজও পাওয়া যায় বাংলাদেশের সিলেট বিভাগে (জাফলং, সীমান্ত এলাকা) এবং অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। এছাড়াও ভারতের রাজমএই অভিন্ন শিলাই দুই ভূখণ্ডের একসময়কার সংযুক্ত থাকার ইঙ্গিত দেয়।


ভারতের উত্তরের মহাযাত্রা: 

প্রায় ১৭ কোটি বছর আগে গন্ডোয়ানাল্যান্ডে ফাটল ধরে। ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও অ্যান্টার্কটিকার মধ্যকার সংযোগস্থল দুর্বল হতে থাকে। ফলশ্রুতিতে, প্রায় ১৪ কোটি বছর আগে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটটি (যা শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের একটি বড় অংশও ধারণ করে) দক্ষিণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে উত্তর দিকে যাত্রা শুরু করে। এই যাত্রা ছিল প্যালিওসিন ও ইওসিন যুগ (প্রায় ৬৬ থেকে ৩৪ মিলিয়ন বছর আগে) জুড়ে এবং ছিল নাটকীয়ভাবে দ্রুত! 

সাধারণত টেকটোনিক প্লেটগুলো বছরে মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার (২-৫ সেমি) করে সরে। কিন্তু ভারতীয় প্লেট বছরে প্রায় ১৫-২০ সেন্টিমিটার হারে উত্তর দিকে ধাবিত হয়েছিল! এই অস্বাভাবিক গতির কারণ ছিলো ভারতীয় প্লেটের অসামান্য পাতলা ভূত্বক। গন্ডোয়ানাল্যান্ডের অন্যান্য অংশের ভূত্বক যেখানে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার পুরু ছিল, সেখানে ভারতীয় প্লেটের ভূত্বকের পুরুত্ব ছিল মাত্র ১০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি । হালকা হওয়ায় এটি অনেক দ্রুত সরে যেতে সক্ষম হয়। প্রায় ৭ কোটি বছরে ভারতীয় প্লেট প্রায় ৯,০০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে বর্তমান অবস্থানে পৌঁছায়, যা অন্য কোন মহাদেশীয় অংশের অতিক্রান্ত দূরত্বের তুলনায় সর্বাধিক।

মহাসংঘাত ও হিমালয়ের জন্ম: 

প্রায় ৫-৬ কোটি বছর আগে (ইওসিন যুগের শুরুতে), দ্রুতগামী ভারতীয় প্লেট তার উত্তর দিকের প্রতিবেশী ইউরেশিয়ান প্লেটের (যার অংশ আজকের তিব্বত) সাথে প্রচণ্ড ধাক্কা খায়। এই মহাসংঘাত (Continental Collision) পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূতাত্ত্বিক ঘটনা।

অরোজেনিক মুভমেন্ট : যখন দুটি মহাদেশীয় প্লেট মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তখন সাধারণত একটি প্লেট অপরটির নিচে পুরোপুরি subdues করতে পারে না (মহাসাগরীয় প্লেটের মতো) কারণ দুটিই তুলনামূলকভাবে হালকা। ফলাফল হল প্রচণ্ড চাপে ভাঁজ হয়ে, উত্থিত হয়ে বিশাল পর্বতমালার*সৃষ্টি – এই প্রক্রিয়াকে বলে অরোজেনিক মুভমেন্ট (Orogenic Movement)। ভারতীয় প্লেটের সাথে ইউরেশিয়ান প্লেটের এই সংঘাতের ফলেই জন্ম নেয় পৃথিবীর সর্বোচ্চ ও সর্বাপেক্ষা তরুণ পর্বতমালা – হিমালয় । এই সংঘাত ও পর্বত গঠন প্রক্রিয়া আজও সক্রিয়, যার কারণে হিমালয় প্রতি বছর কয়েক মিলিমিটার করে উঁচু হচ্ছে এবং এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঘটনা নিয়মিত।

টেথিস সাগরের অবসান ও উপহ্রদের জন্ম: ভারত ও ইউরেশিয়ার মাঝখানে অবস্থিত প্রাচীন টেথিস সাগরের একটি অংশ (যার পূর্ব প্রান্ত ভারত ও বার্মা প্লেটের মাঝে অবস্থিত ছিল) এই সংঘাতের ফলে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়। কিন্তু সংঘাতের ফলে সৃষ্ট ভূত্বকের বিকৃতি ও উত্থান-পতনের কারণে, ভারতীয় ও ইউরাশিয়ান প্লেটের সংযোগস্থলের দক্ষিণে (মূলত আজকের উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের অবস্থানে) একটি বৃহৎ অববাহিকা বা উপহ্রদ (Foredeep Basin) এর সৃষ্টি হয়। এই অববাহিকাই পরবর্তীতে বঙ্গীয় ব-দ্বীপ গঠনের মূল মঞ্চ হয়ে ওঠে।

নদীর সৃষ্টি ও পলির রাজ্য: 

হিমালয়ের উত্থান শুধু পাহাড়ই তৈরি করেনি, সৃষ্টি করেছে এশিয়ার প্রধান প্রধান নদীগুলোরও। সংঘাত ও উত্থানের ফলে ঢাল তৈরি হয়, বৃষ্টির পানি নদীধারায় প্রবাহিত হতে শুরু করে।

গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের উৎপত্তি: হিমালয়ের হিমবাহ ও উচ্চভূমি থেকে জন্ম নেয় অসংখ্য ঝর্ণাধারা, যা একত্রিত হয়ে গঠন করে গঙ্গা (Ganges)এবং ইয়ারলাং সাংপো (Yarlung Tsangpo) নদীকে। ইয়ারলাং সাংপো তিব্বত মালভূমি পেরিয়ে অরুণাচল প্রদেশে প্রবেশ করে এবং সেখানে এর নাম হয় ব্রহ্মপুত্র (Brahmaputra) । এছাড়াও মেঘনা নদীর উৎসমুখও হিমালয় ও পার্শ্ববর্তী উচ্চভূমিতেই।

গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও তাদের অসংখ্য উপনদী সুদূর হিমালয় ও তার পাদদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে পলি, বালি ও কাদা (সেডিমেন্ট) বয়ে করে আনে। এই পলির পরিমাণ অকল্পনীয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এই নদীগুলো প্রতিবছর ১০০ কোটিরও বেশি টন পলি  বয়ে আনে। এর মধ্যে প্রায় ৪০% আসে গঙ্গা থেকে, ৪০% আসে ব্রহ্মপুত্র থেকে এবং বাকি ২০% আসে মেঘনা ও অন্যান্য নদী থেকে।

বঙ্গীয় ব-দ্বীপের গঠন: ২-৩ কোটি বছর ( ওলিগোসিন থেকে মায়সিন) ধরে এই অগণিত টন পলি জমা হতে থাকে সেই পূর্বে উল্লিখিত উপহ্রদ অববাহিকা (Foredeep basin) তে। প্রথমে সমুদ্রতল থেকে উত্থিত হয় অসংখ্য চর ও দ্বীপ। ধীরে ধীরে পলি জমে জমে এই অববাহিকা ভরাট হতে থাকে। নদীগুলো তাদের শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে, এক চরকে আরেক চরের সাথে যুক্ত করে, নতুন ভূমি সৃষ্টি করে চলতে থাকে। এই দীর্ঘ ও ধীর প্রক্রিয়ার ফসলই হল আজকেরবিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ – বঙ্গীয় ব-দ্বীপ (Bengal Delta), যাকে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা ব-দ্বীপ (Ganges-Brahmaputra-Meghna Delta) নামেও ডাকা হয়। এই ব-দ্বীপের প্রায় ১০৫,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা (প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ) বাংলাদেশে অবস্থিত।

একটি জীবন্ত, বিকশিত ভূমি
বঙ্গভূমির জন্মকথা শুধু অতীতের গল্প নয়। এই প্রক্রিয়া আজও সক্রিয় এবং অব্যাহত রয়েছে:

1. নিরবচ্ছিন্ন পলি সঞ্চয়: প্রতিবছর ১০০ কোটি টন পলি এখনও জমা হচ্ছে, বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে ও বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানে। এই পলি নতুন চর ও ভূমি সৃষ্টি করছে (যদিও বাঁধ নির্মাণ ও উজানে বাঁধের কারণে এই পলির কিছু অংশ এখন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে)।

2.  টেকটোনিক সক্রিয়তা:ভারতীয় প্লেট এখনও বছরে প্রায় ৪-৫ সেন্টিমিটার হারে উত্তর-পূর্ব দিকে ইউরেশিয়ান প্লেটের নিচে subdues হচ্ছে। এই চলমান সংঘাত হিমালয়কে উঁচু করছে এবং বাংলাদেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে, বিশেষ করে ডাউকি ফল্ট ও শিলং মালভূমির কাছে, ভূমিকম্পের ঝুঁকি তৈরি করছে।

3.  ব-দ্বীপের গতিশীলতা: নদীর গতিপথ পরিবর্তন, ভাঙ্গন-গড়ন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা পরিবর্তন এবং ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের প্রভাব – সব মিলিয়ে বঙ্গীয় ব-দ্বীপ একটি অত্যন্ত গতিশীল ও পরিবর্তনশীল ভূমিরূপ। এই পরিবর্তনশীলতাই একে অনন্য করেছে, আবার চ্যালেঞ্জও তৈরি করেছে।

সিলেটের পাহাড়ে পাওয়া প্রাচীন লাভাস্তর থেকে শুরু করে পদ্মা-যমুনার কূল ভাঙা পলিমাটি – সবই আমাদের বঙ্গভূমির জন্মকথার নীরব সাক্ষী। আজ থেকে ২৩ কোটি বছর আগে প্যানজিয়ার এক ক্ষুদ্র অংশ থেকে শুরু করে গন্ডোয়ানাল্যান্ডের বিচ্ছিন্ন টুকরো হয়ে দ্রুতগামী যাত্রা, ইউরেশিয়ার সাথে মহাসংঘাত, হিমালয়ের জন্ম, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের সৃষ্টি এবং কোটি কোটি বছরের নিরবচ্ছিন্ন পলি সঞ্চয় – এই সবকিছুরই সম্মিলিত ফসল আমাদের এই সবুজ-শ্যামল, নদীমাতৃক বঙ্গভূমি। এটি শুধুই ভূখণ্ডের জন্মকথা নয়; এটি পৃথিবীর গতিশীলতা, তার অভ্যন্তরীণ শক্তির মহিমা এবং সময়ের বিশাল পরিসরে প্রকৃতির পরিবর্তনের এক মহাকাব্যিক কাহিনী। এই ইতিহাস জানা শুধু কৌতূহল মেটায় না, আমাদের এই ভূমির ভবিষ্যতের সম্ভাবনা বুঝতেও সাহায্য করে।

ইমরান

×