
ছবিঃ সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন মাত্রা—ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানের ভেতরেই গোপনে ঘাঁটি বানিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছে। এ চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েল।
শুক্রবার (১৩ জুন) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল বহু বছর ধরেই ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত গোপন সামরিক প্রস্তুতি চালিয়ে আসছে। এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইরানের ভেতরে গোপন ড্রোনঘাঁটি স্থাপন, উন্নত অস্ত্রশস্ত্র প্রবেশ করানো এবং মোসাদ কমান্ডো মোতায়েনের মতো দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
ইরানের ভেতরে ড্রোনঘাঁটি!
প্রতিবেদনে বলা হয়, মোসাদ এজেন্টরা তেহরানের নিকটবর্তী এলাকায় একটি গোপন ড্রোনঘাঁটি স্থাপন করেছে, যা থেকে রাতে চালানো ড্রোন হামলায় ইরানের ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রগুলোতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানা হয়।
বিশেষজ্ঞরা এটিকে ইসরায়েলের পক্ষে এক বিশাল গোয়েন্দা সাফল্য হিসেবে দেখছেন। কারণ, ইরানের মতো উচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত রাষ্ট্রের ভেতরে এরকম সামরিক অবকাঠামো গড়ে তোলা নিঃসন্দেহে অভাবনীয় কৌশলিক ক্ষমতার প্রমাণ।
অস্ত্র প্রবেশ ও আকাশ প্রতিরক্ষা নিষ্ক্রিয়করণ
এই অভিযানের আরেকটি প্রধান স্তম্ভ ছিল উন্নত অস্ত্রসজ্জা গোপনে ইরানে প্রবেশ করানো। এসব অস্ত্রের প্রকৃত ধরণ প্রকাশ করা না হলেও ধারণা করা হচ্ছে—এগুলো ছিল সাইবার যুদ্ধ সরঞ্জাম, জ্যামিং ডিভাইস ও অত্যাধুনিক ক্ষুদ্রাকৃতির ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা।
এই অস্ত্র ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নিষ্ক্রিয় করে ইসরায়েলি বিমানগুলোকে নির্বিঘ্নে ইরানের আকাশসীমা ব্যবহার করার সুযোগ করে দেওয়া।
কমান্ডো মোতায়েন ও ক্ষেপণাস্ত্র বসানো
তৃতীয় স্তম্ভ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—মোসাদ কমান্ডোদের গোপন অনুপ্রবেশ। তারা মধ্য ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা সাইটগুলোর কাছে নিখুঁতভাবে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে, যা আকারে ছোট হলেও অত্যন্ত শক্তিশালী এবং লক্ষ্যবস্তুকে নিঃশেষে ধ্বংস করতে সক্ষম।
বিশ্লেষকদের মতে, এই কমান্ডো অপারেশন ইরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে উন্মোচন করেছে এবং ভবিষ্যৎ ইসরায়েলি অভিযানের জন্য একপ্রকার 'গেটওয়ে' তৈরি করে দিয়েছে।
শেষ কথা
এই ধরনের গোপন সামরিক প্রস্তুতি এবং ইরানের অভ্যন্তরে অভিযান পরিচালনা করা ইসরাইল-ইরান সংঘাতকে এক নতুন ও বিপজ্জনক দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা গোটা মধ্যপ্রাচ্যেই নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
ইমরান