ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৮ মে ২০২৫, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চট্টগ্রামে বিখ্যাত লাল মিয়ার লাল শরবত

রায়হান হোসাইন, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ০৯:৫১, ২৬ মে ২০২৫; আপডেট: ০৯:৫৪, ২৬ মে ২০২৫

চট্টগ্রামে বিখ্যাত লাল মিয়ার লাল শরবত

শীত বর্ষায় শরবতের চাহিদা কম থাকলেও গরমে ছোট বড় সকলের পছন্দের তালিকায় থাকে শরবত। বিশেষ করে হরেক রঙের ও স্বাদের শরবতের দেখা পাওয়া যায় মাহে রমজান আসলে। তবে চট্টগ্রামে এমন এক শরবতের দোকান আছে, যে দোকানের শরবত সবসময়ই সমান তালে জনপ্রিয়। বলছিলাম লাল মিয়ার লাল শরবতের কথা।

লাল শরবত বলতে মহব্বতের শরবত। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে তিনি চট্টগ্রামের লাভলেইন এলাকায় শরবত বিক্রি করে আসছেন৷ শুধু শরবত বিক্রি করেই জনপ্রিয় লাল মিয়া। আর তাই তো চট্টগ্রামে শরবত পছন্দ করেন, কিন্তু লাল মিয়াকে চিনেন না কিংবা তার লাল শরবতের কথা শুনেননি- এটা হতেই পারে না। ছোট বড় সব শ্রেণী পেশার মানুষ নিয়মিতই খান লাল মিয়ার লাল শরবত। চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানাধীন লাভলেইন এলাকায় লাভলেইন জামে মসজিদের সামনে তার এই শরবতের দোকান। একই স্থানে ১৮ বছর ধরে ব্যবসা করে যাচ্ছেন তিনি। প্রতিদিন তার এই শরবত খেতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে বহু মানুষ। 

শরবত বিক্রেতা লাল মিয়া জানান, প্রশাসন থেকে শুরু করে এমপি মন্ত্রীরাও লাক্সারিয়াস গাড়ি হাকিয়ে এখানে এসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার শরবত খান। চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম মোহাব্বত ই শরবত তিনিই এনেছিলেন বলে দাবি করেন। তিনি আরো জানান, শরবতের বরফ ও পানি তিনি ডিপ পানি দিয়েই ব্যবহার করেন। স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ পানি দিয়ে শরবত তৈরী করেন বলে দাবি করেছেন লাল মিয়া। এছাড়াও শরবতে মেশানো ফলগুলো তিনি বাজারে যাচাই বাছাই করে ভালোমানের ফল নিয়ে আসেন। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার শবরত খায়। তবে কত গ্লাস কোন কোন শরবত বিক্রি করেন, এই হিসেব তিনি দিতে চাননি। 

লাল মিয়ার দোকানে শরবত খেয়ে খুশি ক্রেতারা। কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বললে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এছাড়াও অন্যান্য শরবতের তুলনায় তার শরবতের স্বাদ ও মানের ভিন্নতা আছে বলেও জানান। 

সুদূর পতেঙ্গা থেকে আসা এক ক্রেতা জানান, নাম শুনে এখানে তিনি লাল মিয়ার শরবত খেতে এসেছেন। মোহাব্বত ই শরবত খেয়েছেন গ্লাস প্রতি ৫০ টাকা দরে। শরবত পান করে মোটামুটি ভালো বলে জানিয়েছেন তিনি। দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানের তুলনায় দাম ঠিক আছে।

লাল মিয়া মোট তিন প্রকারের শরবত বিক্রি করেন৷ মোহাব্বত ই শরবত, জাফরানি শরবত ও বাদাম শরবত। এরমধ্যে মোহাব্বতের শরবত তৈরি করেন তরমুজ, তোকমা ও দুধ দিয়ে। এ শবরত প্রতি গ্লাস বিক্রি হয় ৩০ টাকা। অন্যদিকে বাদাম শরবত তৈরি করেন কাজু বাদাম, পেস্তাবাদাম ও কাঠ বাদাম দিয়ে। আর এই শরবতের মূল্য ৪০ টাকা। জাফরানি শরবত প্রতি গ্লাস ৫০ টাকা। এই শরবত তৈরি হয় আম ও দুধ দিয়ে। 

লাল মিয়ার বাড়ি ভোলা জেলায়। পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন চট্টগ্রাম নগরীর লাভলেইন এলাকায়। সকাল ১০ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে লাল মিয়ার লাল শরবতের দোকান।
 

নোভা

×