ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

মানুষের সেবায় সুখ পাই

মনোয়ার হোসেন

প্রকাশিত: ০০:৪৪, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

মানুষের সেবায় সুখ পাই

মাহিয়া মাহি

রুপালি পর্দা থেকে রাজনীতির মাঠে নেমেছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। ঢাকাই ছবির এই আলোচিত নায়িকা এবার সাফল্য পেতে চান রাজনীতির ভুবনে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে চান জনসাধারণের কল্যাণে। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে জন্মশহর রাজশাহী থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। রাজশাহী-১ আসন থেকে নির্বাচন করবেন তিনি। তবে ওই আসনের এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর তালিকায় ‘ভুয়া স্বাক্ষরের’ অভিযোগে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে এই নায়িকার। তাই বলে দমে যাওয়ার পাত্রী নন তিনি। শেষ পর্যন্ত ভোটযুদ্ধে থাকার প্রত্যাশায় নির্বাচন কমিশনে আপিল করবেন গ্ল্যামার দুনিয়ার এই বাসিন্দা। থাকতে চান নির্বাচনের ময়দানে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আপন অঙ্গীকারসহ নানা বিষয়ে জনকণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী। আলাপচারিতার সেই অংশটুকু মেলে ধরেছেন- মনোয়ার হোসেন

সিনেমার নায়িকা থেকে জনপ্রতিনিধি হওয়ার আকাক্সক্ষাকে মানুষ কিভাবে গ্রহণ করছে?
এতদিন তারা আমায় বড়পর্দায় দেখেছে। প্রেক্ষাগৃহে কিংবা চায়ের দোকানের টিভিতে আমার অভিনীত ছবি দেখে বিনোদিত হয়েছে আমজনতা। ফলে নির্বাচনে দাঁড়ানোর আগে থেকেই জনমানুষের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা গড়ে উঠেছে। এখন সেই মানুষগুলোর খুব কাছাকাছি যেতে পারছি। জনমানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক বৃদ্ধি করছি। তাদের আশীর্বাদ নেওয়ার পাশাপাশি অকৃত্রিম ভালোবাসা অনুভব করছি। সব মিলিয়ে বলা যায়, জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ মানুষ আমাকে সাদরে গ্রহণ করেছেন।
নির্বাচিত হলে জনকল্যাণে কি ধরনের কাজ করবেন?
মানুষের ভোটে নির্বাচিত হলে তাদের ভালোবাসার প্রতিদান দেব। তাদের কল্যাণে কাজ করব। এলাকার প্রতিটি ঘরকে নারীদের কর্মসংস্থানে পরিণত করব। নানামুখী প্রশিক্ষণ ও সহায়তার মাধ্যমে তারা আয় করতে শিখবে। পরিবারের বোঝা হয়ে থাকার পরিবর্তে তাদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলব। পাশাপাশি তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে সুযোগ সৃষ্টি করব। চাকরির বদলে ব্যবসার মাধ্যমে তরুণদের স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার চেষ্টা করব। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তেমনটাই চান। এজন্যই তিনি তরুণদের ক্ষুদ্রঋণের ব্যবস্থা করেছেন। তবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন যতটা সহজ হয়; নির্বাচিত হতে না পারলে সেটা সংকুচিত হয়ে যায়।
মনোনয়নপত্রের বৈধতাপ্রাপ্তির জন্য কী করবেন?
মনোনয়ন ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করব। যে গ্রাউন্ড দেখিয়ে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে, সে বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণাদি রয়েছে। আপিল করার পর আমি সেগুলো উপস্থাপন করব। 
শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও কী রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন?
আমি জনসেবা করতেই রাজনীতির মাঠে নেমেছি। এখান থেকে মুনাফা করার পরিবর্তে জনকল্যাণে কাজ করতে চাই। পেশাগতভাবেই আমি স্বাবলম্বী ও সচ্ছল হওয়ায় সেটা করা খুব কঠিন কাজ নয়। তাই জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ব্যবসা করতে চাই না। আর শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে রাজনীতির মাঠে সক্রিয়া থাকব। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জনসেবায় কাজ করে যাব। প্রয়োজনে পাঁচ বছর অপেক্ষা করে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য নিজেকে আরও বেশি প্রস্তুত করব।
মনোনয়নপত্রের বৈধতা পেলে ভোটযুদ্ধে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
তানোর-গোদাগাড়ি তথা রাজশাহী-১ আসনের মানুষ আমাকে অনেক বেশি পছন্দ করে। এই শহরেই কেটেছে আমার শৈশব-কৈশোর। এ কারণে এখানে আমার জনসমর্থনও অনেক বেশি। এলাকাবাসীর একটা টান আছে আমার প্রতি। তাই হলফ করে বলতে পারি উৎসবমুখর পরিবেশ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ভোট হলে জয়ের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।
আপাতত কেমন প্রচারণা চলছে?
প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছি। প্রতিদিন জনসংযোগ করছি। মানুষের দুঃখ-দুর্দশাসহ আকাক্সক্ষার কথাগুলো শুনছি। সেগুলো সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে কিভাবে সিনেমায় সময় দেবেন?
সিনেমায় অভিনয় করা হচ্ছে আমার পেশা। অন্যদিকে রাজনীতির মাধ্যমে জনসেবা করা আমার নেশা। মানুষের সেবায় সুখ পাই। তাই দুটোকেই পাশাপাশি রেখে নিজেকে এগিয়ে নেওয়াই আমার বিশেষত্ব। সেটাই আমার আমি কিংবা নিজস্ব যোগ্যতা।
ভোটের দিন বিশৃঙ্খলা হলে আপনার ভূমিকা কী হবে?
অনেকেই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করে। আমার আসনে তেমনটা হলে স্থানীয় জনতাকে নিয়ে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলব।

×