
নচিকেতা চক্রবর্তী
বাংলা গানের ‘আগুন পাখি’ নচিকেতা চক্রবর্তী। সংগীত জগতে ৩০ বছর পার করেছেন তিনি। তার কলম বরাবরই বিস্ফোরণ ঘটায়। উঠে আসে নানা প্রাসঙ্গিক বিষয়। এবার পূজার আগে নতুন সৃষ্টি নিয়ে হাজির হয়েছেন নচিকেতা। সেই সৃষ্টিতে আগুন ঝরিয়েছেন, যা আপোসহীন নচিকেতার জ্বলন্ত উদাহরণ।
পূজার আগে নতুন মৌলিক গান উপহার দিলেন নচিকেতা চক্রবর্তী। ‘হয়তো তোমারই জন্যে’ এই গানে রয়েছে মণিপুরের জ্বলন্ত সমস্যার কথা। কৃষক আন্দোলনের কথা, জিডিপি নিয়ে উদ্বেগ। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রসঙ্গও বাদ পড়েনি। সাম্প্রতিক সব জ্বলন্ত সমস্যার ঝলকানি দিয়েই সাজানো ‘হয়তো তোমারই জন্যে’। শ্রেণিহীন সমাজের হয়েই তার এই সুর। গানের কথায় কথায় শিল্পী বললেন, ‘তুমি চাইলে স্বপ্নপুর, এদিকে জ্বলছে মণিপুর। তুমি চড়লে স্বপ্নরথে, এদিকে কৃষক নেমেছে পথে।’
নচিকেতার এই গানকে ভালোবাসায় ভাসিয়ে দিয়েছেন ভক্তরা। গায়কের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল আমিই নচিকেতা থেকে মুক্তি পেয়েছে এই গান। গানের কথা ও সুরও স্বয়ং নচিকেতার। কমেন্ট বক্সে ‘আগুন পাখি’র ভক্তরা ভালোবাসা উজাড় করে দিয়েছেন। একজন লিখেছেন, সত্যি বাঙালির কোনো অপশন নেই নচিকেতা ছাড়া। অপর এক ভক্ত লিখেছেন, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, সংবেদনশীলতা ও ভালোবাসার মিছিল হোক দীর্ঘতর। তিন দশকে বদলায়নি ভারতের পরিস্থিতি আর পাল্টায়নি নচিকেতার প্রতিবাদের ভাষা, তার প্রমাণও দিলেন গায়ক। তার ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেন নচিকেতা। সেখানে রয়েছে ১৯৯৩ সালে লেখা গানের এক লাইন ‘ঘুষ-ঘুষ-ঘুষের এক ঘুষঘুষে জ্বরে গোটা দেশ চিৎকার করে ডাকে ডাক্তার’।
আর ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে গায়কের উপলব্ধি, দেশের আশি শতাংশ টাকা দশটা পরিবারের কাছে রাখা। ১৯৯৩ সালের ১৪ আগস্ট নচিকেতার প্রথম অ্যালবাম ‘এই বেশ ভাল আছি’ মুক্তি পেয়েছিল। এরপর অজস্র সাফল্য, ২৫০-এর বেশি গান রয়েছে তার। তবুও মাটিতে পা রেখে চলাতেই বিশ্বাসী তিনি। কয়েকদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে গায়ক বলেছেন, অস্থির সময়ের প্রোডাক্ট আমি। ওই সময়টা যদি না তৈরি হয়, তাহলে নচিকেতা হওয়া অসম্ভব। আগামী ৫০ বছরেও আরেকটা নচিকেতা আসবে না, এটুকু বলতে পারি।