ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তিন শিক্ষকের জন্য চারশ’ শিক্ষার্থীর জীবন থেমে গেল!

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ০০:১৩, ১৯ মে ২০২৫

তিন শিক্ষকের জন্য চারশ’ শিক্ষার্থীর জীবন থেমে গেল!

ছবি: জনকণ্ঠ

বরিশাল নার্সিং কলেজের আন্দোলনরত পোস্ট বেসিক বিএসসি নার্সিং শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারেননি। শিক্ষকদের অসহযোগিতার কারণে রবিবার (১৮ মে) শেষদিনেও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা ফরম পূরণ করতে ব্যর্থ হন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের শাটডাউন কর্মসূচিতে হামলাকারী তিন শিক্ষককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ চার শতাধিক শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণ করতে দেয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।

ফরম পূরণ না হওয়ায় রবিবার দিনব্যাপী ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তারা।

রবিবার দিবাগত রাতে নার্সিং শিক্ষার্থীদের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানান, মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয়ভাবে ১৬ মে থেকে শাটডাউন কর্মসূচি সাময়িকভাবে শিথিল করা হয়েছে।

তাদের দাবি, মন্ত্রণালয় আশ্বস্ত করেছে, ইন্সট্রাক্টর আলী আজগর, ফরিদা বেগম ও সাইফ হোসেন রনি মোল্লার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ১৬ ও ১৭ মে কলেজ অধ্যক্ষকে জানানো হয়। এছাড়া, একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালুর অনুরোধ জানানো হয়।

তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, হামলাকারী তিন শিক্ষককে কলেজে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলেও, বাকি ২৯ জন শিক্ষক প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশ নিতে রাজি হননি। তারা ওই তিনজন শিক্ষককে সঙ্গেই ক্যাম্পাসে প্রবেশের দাবি জানান।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৬ মে থেকে অধ্যক্ষ ও অন্যান্য শিক্ষকদের একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও তারা ফরম পূরণ কার্যক্রমে সহায়তা করেননি। এমনকি রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন সময়েই অধ্যক্ষ ওই তিন শিক্ষককে নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় শিক্ষার্থীদের বাধায় প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ ব্যর্থ হয় এবং শিক্ষকরা ফরম পূরণ না করেই ফিরে যান।

তারা আরও বলেন, “মন্ত্রণালয় আমাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দিলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের সঙ্গে অবিচার করছে। রবিবার ছিল ফরম পূরণের শেষ দিন। কিন্তু আমাদের চার শতাধিক শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করতে পারেনি। এতে করে আমাদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।”

এ বিষয়ে বরিশাল নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা আক্তার রুমি বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই ফরম পূরণের জন্য ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে দেয়নি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ফিরে আসতে বাধ্য হই।”

শহীদ

×