ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চীনের খনিজ, ট্রাম্পের শর্ত: বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন মোড়!

প্রকাশিত: ০০:৪৩, ১২ জুন ২০২৫

চীনের খনিজ, ট্রাম্পের শর্ত: বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন মোড়!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এতে চীন বিরল খনিজ এবং চুম্বকজাত পণ্য সরবরাহে সম্মত হয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের হুমকি থেকে সরে এসেছে।

ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “চীনের সঙ্গে আমাদের চুক্তি সম্পন্ন, এখন শুধু আমার এবং প্রেসিডেন্ট শি’র চূড়ান্ত অনুমোদন বাকি।”

এই চুক্তির আগে দুই দেশের মধ্যে লন্ডনে দুই দিনব্যাপী উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়, যা মূলত মে মাসে ঘোষিত সাময়িক ট্রেড যুদ্ধবিরতির ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হয়। তখন বর্ধিত শুল্ক আরোপের কারণে উভয় দেশের বাণিজ্য কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল।

চুক্তির বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি, তবে উভয় পক্ষ জানিয়েছে যে এটি মে মাসের সমঝোতার কাঠামোর ওপর ভিত্তি করেই তৈরি।

চীনের উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী লি চেংগ্যাং বলেন, “৫ জুন দুই রাষ্ট্রপ্রধানের ফোনালাপ ও জেনেভা বৈঠকে অর্জিত সমঝোতার ভিত্তিতে একটি বাস্তবায়ন কাঠামোতে আমরা একমত হয়েছি।”

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রেসিডেন্টদের অনুমোদনের পর চুক্তি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

চুক্তির পেছনে মূল কারণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ—চীন বিরল খনিজ ও চুম্বকজাত উপকরণের রপ্তানি বিলম্বিত করছে। এসব খনিজ স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির জন্য অত্যাবশ্যক।

অন্যদিকে চীন যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর এবং এআই প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ, ও শিক্ষার্থীদের ভিসা সীমিত করার পদক্ষেপের সমালোচনা করে আসছিল।

যুক্তরাষ্ট্র চুক্তির অংশ হিসেবে কিছু “প্রতিপ্রতিক্রিয়া” বা পাল্টা ব্যবস্থা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যদিও তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, আলোচনাগুলো ছিল সীমিত পরিসরের এবং একটি বিস্তৃত বাণিজ্য চুক্তি এখনো সময়সাপেক্ষ।

চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক হারে শুল্ক আরোপ করেন, যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে চীনের ওপর। চীনও পাল্টা শুল্ক আরোপ করে।

মে মাসে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশ ৯০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, যার আওতায় যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে শুল্ক ১৪৫% থেকে কমিয়ে ৩০%-এ আনে এবং চীনও শুল্ক কমিয়ে ১০%-এ নামিয়ে আনে।

তবে এর পর উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে "নন-ট্যারিফ প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের" অভিযোগ তোলে।

বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান চুক্তির প্রভাব সীমিত এবং এটি বৃহত্তর বাণিজ্যিক বা ভূরাজনৈতিক সমঝোতার সম্ভাবনা তেমন বাড়ায়নি।

ওয়াশিংটন-ভিত্তিক পরামর্শক সংস্থা প্যাঙ্গেয়া পলিসির প্রতিষ্ঠাতা টেরি হেইন্স বলেন, “জেনেভা ‘পজ’-এ ফিরে যাওয়া একটা ক্ষুদ্র অগ্রগতি মাত্র, যা বড় ধরনের মার্কিন-চীন চুক্তির দিকে তাৎপর্যপূর্ণ কোনো অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয় না।”

Jahan

×