ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

পিএফআই সিকিউরিটিজ পর্ষদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:৩১, ৩ মে ২০২৫

পিএফআই সিকিউরিটিজ পর্ষদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

পিএফআই সিকিউরিটিজ পর্ষদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

বিনিয়োগকারীদের ১৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারের সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউস (ট্রেক নম্বর- ৭৯) পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের দেশত্যাগে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশমন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে ব্রোকারেজটির পরিচালক ও কর্মকর্তাদের ব্যাংক হিসাবসমূহ স্থায়ী অবরুদ্ধ করারসহ সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সেইসঙ্গে যোগসাজোস করে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পিএফআই সিকিউরিটিজের পরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সম্প্রতি পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও যাচাই বাছাই করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
গঠিত তদন্ত কামিটি ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মার্জিন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেতিবাচক ইক্যুইটি কেন বাড়ছে ও এর জন্য কারা দায়ী, নেতিবাচক ইক্যুইটির পরিমাণ, প্রভিশনস বা মার্জিন অ্যাকাউন্টের বিপরীতে রক্ষিত তহবিল, প্রভিশনসের ঘাটতি, মার্জিন অ্যাকাউন্টে অননুমোদিত লেনদেনসহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে (সিসিএ) প্রতিষ্ঠানটির ২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা ঘাটতি পায়।
তথ্য মতে, বিগত সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা ব্রোকারেজ হাউসগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট পর্যন্ত পিএফআই সিকিউরিটিজের গ্রাহকের পাওনা হিসাবে ২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা ঘাটতি রয়েছে। এরই ধরাবাহিকতায় ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কনসোলিডেটেড কাস্টমারস অ্যামাউন্টের ঘাটতি পূরণের জন্য প্রতিষ্ঠানটির সময় বৃদ্ধির আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটির ১৭ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধনের মেয়াদ শেষ হয়। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধন নবায়ন করেনি বিএসইসি। ফলে ওই সময় থেকে পিএফআই সিকিউরিটিজের স্টক-ডিলার এবং স্টক-ব্রোকার নিবন্ধন সনদ নবায়ন স্থগিত হয়ে যায়।

এরপর ওই বছরের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সকল পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা সিইওর ব্যাংক হিসাবের লেনদেন অবরুদ্ধ রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই তদন্ত কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদন অনুযায়ী পিএফআই সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে বিএসইসি।

এদিকে ২০২০ সালের পর থেকে মশিহর সিকিউরিটিজ, তামহা সিকিউরিটিজ, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ, বানকো সিকিউরিটিজ, ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডস, সাবভ্যালি সিকিউরিটিজ, ডন সিকিউরিটিজ, ইনডিকেট সিকিউরিটিজ, সাদ সিকিউরিটিজ ও শাহ মোহাম্মদ সগির থেকে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম এবং জালিয়াতি ঘটে।

×